উত্তেজনার তুঙ্গে, ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তি স্থগিত করল পাকিস্তান।

উত্তেজনার তুঙ্গে, ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তি স্থগিত করল পাকিস্তান।
উত্তেজনা চরমে, ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তি স্থগিত করল পাকিস্তান পাকিস্তান ও ভারতের পতাকা। ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মীরের পেহেলগামকাণ্ডের পর ভারতের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান তার ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তি স্থগিত করেছে। এই সিদ্ধান্তটি বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে নেওয়া হয়, যেখানে সভাপতিত্ব করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।

দুই দেশের পরস্পরের সার্বভৌম ভূখণ্ডের প্রতি সম্মান করার প্রতিশ্রুতি এবং বিরোধ নিষ্পত্তিতে যুদ্ধ এড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি সিমলা চুক্তির মূল ভিত্তি।

কাশ্মীর, যা পৃথিবীর ভূস্বর্গ হিসেবে পরিচিত, ভারত ও পাকিস্তান এই অঞ্চলটি তাদের নিজস্ব দখল অনুযায়ী সিমলা চুক্তির আলোকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। ওই চুক্তির আওতায়, কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা হয়েছে।

তবে, পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিত করার পর, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে এবং সামরিক উত্তেজনা আরও তীব্র হচ্ছে।

ভারত এবং পাকিস্তান উভয় দেশই পারমাণবিক বোমার অধিকারী, যদিও এখন পর্যন্ত এর ব্যবহার হয়নি। যদিও মাঝে মাঝে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘাত ঘটলেও, সাম্প্রতিক ইতিহাসে কারগিল যুদ্ধ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে বড় কোনো যুদ্ধ হয়নি।

সিমলা চুক্তির প্রধান প্রধান বিষয়

১. অপরের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি: দুই দেশ তাদের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রতিশ্রুতি দেয়।

২. শান্তিপূর্ণ ন্যায়বিচার: চুক্তিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, দ্বিপক্ষীয় আলোচনা বা আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হবে; সশস্ত্র সংঘাতের মাধ্যমে নয়।

৩. নিয়ন্ত্রণের রেখা: এটি জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা চিহ্নিত করার জন্য একটি কাঠামো সৃষ্টি করে এবং সেই রেখা বরাবর একটি যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

Advertisement

৪. সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ: চুক্তিতে কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা রয়েছে।

সিমলা চুক্তি ভবিষ্যতের আলোচনার জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে মনে করা হয়, যদিও বিভিন্ন সংঘাত ও কূটনৈতিক চাপে এর কার্যকারিতা চ্যালেঞ্জের মুখে ছিল, যা বৃহস্পতিবার প্রমাণ হলো। 

পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে; পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের দায় দেখছে ভারত। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীসহ তাদের সমর্থনকারীদের বিনাশ করার হুংকার দিয়েছে ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার। 

উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পানি আটকে দেওয়ার যেকোনও প্রচেষ্টাকে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে মন্তব্য করেছে তার মন্ত্রিসভা।

পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়ায় কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতির মুখে রয়েছে ভারত ও পাকিস্তান।

 সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়াইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসএনডিটিভিডন নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *