বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, দল ক্ষমতায় এলে দেশের শিক্ষিত বেকারদের জন্য এক বছরের ‘বেকার ভাতা’ চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি, যাঁরা এখনো চাকরি পাননি, তাঁদের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করার। এ সময়ের মধ্যেই সরকার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কর্মসংস্থানে উদ্যোগ নেবেন।”
বুধবার বিকেলে রংপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুর জেলা নিয়ে আয়োজিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ে বিএনপির একটি ভার্চ্যুয়াল প্রশিক্ষণ কর্মশালায় যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান আরও বলেন, “বিগত সময়ে সরকারি চাকরিতে দলীয়করণ হয়েছে। আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত অনেক তরুণ বয়স পার করে ফেলেছেন, যার ফলে তাঁরা চাকরির সুযোগ হারিয়েছেন। এ বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বিএনপি কর্মপরিকল্পনা করছে।”
স্বাস্থ্য খাতে বিএনপির পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্নে তিনি জানান, জনসংখ্যা বিবেচনায় বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন কঠিন হলেও, ভবিষ্যতে ধাপে ধাপে উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব। “আমাদের দেশের অনেক মানুষ সেলফ-এমপ্লয়েড। এখনই এটা করা সম্ভব কি না, তা বলা যাচ্ছে না,” বলেন তিনি।
নারীর ক্ষমতায়নে বিএনপির প্রতিশ্রুতি উল্লেখ করে তিনি জানান, সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করার প্রস্তাব দলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি অন্যান্য গণতান্ত্রিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে।
সংখ্যালঘুদের জন্য ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষণের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তারেক রহমান বলেন, “আমরা সবাইকে বাংলাদেশি হিসেবে দেখি। সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়, রাষ্ট্র সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করবে।”
তিস্তা মহাপরিকল্পনা ও রংপুর বিভাগের অর্থনৈতিক বৈষম্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তিস্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বাস্তবসম্মতভাবে মানুষের কল্যাণে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।”
একই অনুষ্ঠানে তিনি জানান, প্রতিবছর একজন প্রান্তিক কৃষকের একটি ফসলে সম্পূর্ণ সহায়তা দেবে বিএনপি। “প্রাথমিকভাবে যাঁদের জমির পরিমাণ ৭ বিঘার কম, তাঁদের এই সুবিধা দেওয়া হবে,” বলেন তারেক রহমান।
রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির আয়োজনে দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী এবং বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতারা—সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, অধ্যাপক মওদুদ হোসেন আলমগীর, আসাদুল হাবিব দুলু, মোরশেদ হাসান খান, মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, রুমিন ফারহানা ও ফারজানা শারমিন।