ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের মধ্যে বিরোধ এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে দুই কলেজের অধ্যক্ষদের অংশগ্রহণে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রাথমিক আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই দুই কলেজসহ ধানমন্ডি এলাকার আরও তিনটি কলেজ একটি যৌথ সমঝোতায় পৌঁছাবে। সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রস্তাবিত চুক্তির শর্তগুলো মেনে চললে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হবে।
আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ধানমন্ডি থানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ এবং ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষগণ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম জানান, মঙ্গলবার ঘটে যাওয়া ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো ধরনের বিরোধ এড়াতে সংশ্লিষ্ট কলেজগুলো একটি সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছাবে।
তিনি আরও জানান, সভায় একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে, যেখানে এই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং কলেজ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা যুক্ত আছেন। এই প্ল্যাটফর্মে তথ্য আদান-প্রদান ও সমন্বয়ের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হবে।
চুক্তির আওতায় ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের পাশাপাশি বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রব কলেজ এবং বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ কলেজও যুক্ত থাকবে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এই সমঝোতা অনুসরণ করা হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে।
মঙ্গলবারের সংঘর্ষের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম জানিয়েছেন, সংঘর্ষে জড়িতদের শনাক্ত করে প্রথমে তাদের অভিভাবকদের ডেকে এনে সচেতন করা হবে। তিনি বলেন, “শেষবারের মতো তাদের বোঝানো হবে। ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়ালে তখন আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
সংঘর্ষের দিন মামলা দায়েরের বিষয়ে তিনি জানান, “প্রাথমিকভাবে আমরা মামলা করিনি, কারণ উভয় পক্ষই শিক্ষার্থী। আমরা চাই, বিষয়টি সমঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হোক।”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার এক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধানমন্ডি এলাকায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে এলাকা কিছু সময়ের জন্য অস্থির হয়ে ওঠে। দফায় দফায় চলা এ সংঘর্ষে পুলিশ, শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। এর মধ্যে ১৩ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উভয় কলেজ কর্তৃপক্ষ বুধবার ও বৃহস্পতিবারের জন্য শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।