
বগুড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের পৌর পার্কে টিটু মিলনায়তনের সামনে এই সংঘর্ষ ঘটে। সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে এনসিপির পূর্বঘোষিত সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উভয় পক্ষের মধ্যে অন্তত তিন দফা হাতাহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম জানা যায়নি। অভিযোগ রয়েছে, ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা হস্তক্ষেপ না করে নীরব ভূমিকা পালন করে।
জানা গেছে, ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের’ দাবিতে এনসিপি ওই সমাবেশের আয়োজন করে। একই স্থানে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অংশ।
সমাবেশ শুরু হলে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে বক্তব্য দেন। এ সময় ছাত্র আন্দোলনের একাংশ “ভুয়া ভুয়া” স্লোগান দিতে দিতে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করে। এনসিপির নেতাকর্মীরা বাধা দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। সারজিস আলম বক্তব্য দেওয়ার সময়ও কয়েক দফা ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।
সমাবেশে সারজিস আলম বলেন, “আওয়ামী লীগ আর এ দেশে রাজনীতি করতে পারবে না। তাদের প্রতিরোধের সূচনা হবে বগুড়া থেকেই।” তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনে বগুড়া বঞ্চিত হয়েছে—চাকরি, অবকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা—সবক্ষেত্রেই বৈষম্য করা হয়েছে।
তিনি বগুড়া বিমানবন্দর খুলে দেওয়া, আধুনিক হাসপাতাল পুনর্গঠন এবং ঢাকা-বগুড়া রেললাইন চালুর দাবি জানান। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তুলেন।
সমাবেশ পরিচালনা করেন যুথী অরণ্য প্রীতি। বক্তব্য দেন তাহসিন রিয়াজ, সাকিব মাহদী, রফিকুল ইসলাম পলক, আহমেদ সাব্বিরসহ বিভিন্ন নেতাকর্মী। তারা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে একমত পোষণ করেন।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সাতমাথায় গিয়ে শেষ হয়।