বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী ইন্দোনেশিয়া

বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতা আরও গভীর করার আহ্বান জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরমান্থা ক্রিস্টিয়ান নাসির। সোমবার ঢাকায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

তেজগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার বিষয়ে আলোচনা হয়। উপমন্ত্রী নাসির জোর দিয়ে বলেন, জাকার্তা ঢাকা-ভিত্তিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে প্রস্তুত।

অধ্যাপক ইউনূস বৈঠকে বলেন, “আমাদের অবশ্যই ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে উঠতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে অনেক মিল থাকা সত্ত্বেও আমাদের সম্পর্ক এখনও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি।” তিনি মানুষের মধ্যে বিনিময়, বিশেষ করে শিক্ষা ও সংস্কৃতি সফরের গুরুত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ইন্দোনেশিয়ান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির প্রস্তাব দেন উপমন্ত্রী নাসির। পাশাপাশি তিনি ইন্দোনেশিয়ান কূটনৈতিক সংস্থায় বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনার কথাও জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ইন্দোনেশিয়ার পর্যটন হটস্পট বালিতে ভিসা-মুক্ত ভ্রমণের প্রস্তাব দেন, যা দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

উপমন্ত্রী নাসির জানান, বাংলাদেশকে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের সংস্থা আসিয়ান-এর বিভাগীয় সংলাপ অংশীদার হিসেবে দেখতে চায় ইন্দোনেশিয়া। অধ্যাপক ইউনূস এই সমর্থনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এটি আমাদের আসিয়ান-এর পূর্ণ সদস্যপদ অর্জনের পথে সহায়ক হবে।”

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে অভিহিত করেন উপমন্ত্রী নাসির।

বাণিজ্য সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি জানান, বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম আমদানিকৃত গন্তব্য। ইন্দোনেশিয়ান ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল, উৎপাদন খাত এবং বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।

আলোচনার একপর্যায়ে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান দরকার।” তিনি সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ার সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করেন।

উত্তরে উপমন্ত্রী নাসির জানান, ইন্দোনেশিয়া মানবিক সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকবে এবং এ সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে সক্রিয়ভাবে কাজ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *