
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের প্রতি একটি আধুনিক, স্বচ্ছ ও কার্যকর সিস্টেম গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন, যার মাধ্যমে প্রকৃত দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সরকারি সুবিধা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
সোমবার রাজধানীর স্টেট গেস্ট হাউস যমুনায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি বলেন, “এই মন্ত্রণালয় এখনও ২০১৩ সালের পুরনো মডেলের উপর ভিত্তি করে কাজ করে চলেছে। এটা জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, পুরনো প্রশাসনিক কাঠামোর কারণে ভুল তথ্য, বিভ্রান্তি ও দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়েছে। অনেক যোগ্য মানুষ উপকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, আবার অনেক অযোগ্য ব্যক্তি রাজনৈতিক প্রভাবের মাধ্যমে সুবিধা পাচ্ছেন। “রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে অনেকেই অবৈধভাবে ভাতা পেয়েছেন। এই পক্ষপাতিত্ব বন্ধ করতে হবে,” বলেন তিনি।
সিনিয়র সিটিজেন ভাতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)-এর তথ্য ব্যবহার করা উচিত। এতে বয়স যাচাই সহজ হবে এবং জালিয়াতি ঠেকানো সম্ভব হবে।”
সভায় অধ্যাপক ইউনূস নারীদের ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, “যেখানে দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে, সেখানে মেয়েদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমাদের মনোযোগের কেন্দ্রে রাখতে হবে নারীদের।”
ডিজিটাল রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের উচিত একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা, যাতে সমস্ত সরকারি সুবিধা, আবেদন প্রক্রিয়া এবং তথ্য এক জায়গায় পাওয়া যায়। “মানুষ যাতে সহজেই জানতে পারে, কী কী সুবিধা তারা পেতে পারে, সেজন্য একটি অ্যাপ তৈরি সময়ের দাবি,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন:
- সমাজসেবা উপদেষ্টা শারমিন এস মুর্শিদ
- সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তারা
- এসডিজি কো-অর্ডিনেটর লামিয়া মোরশেদ
- প্রিন্সিপাল সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত—সেবাগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা, যাতে দরিদ্র, প্রবীণ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে এগুলো বাস্তবিক অর্থেই পৌঁছে দেওয়া যায়।”