
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সাহসী বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মোঃ তৌকির ইসলাম সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে নিয়মিত প্রশিক্ষণের সময় এক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। উড্ডয়নের shortly পরই তার এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হলে তিনি বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে গিয়ে প্রাণ উৎসর্গ করেন। তবে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি বিমানটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যান, যার ফলে অনেকগুলো প্রাণ রক্ষা পায়।
দুর্ভাগ্যবশত, বিমানটি ঢাকার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার পরপরই বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ও অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ও অন্যান্য নিকটস্থ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। তবে সকল চিকিৎসা প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ২৭ বছর ৮ মাস ১৩ দিন।
আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীর উত্তম এ কে খন্দকারে মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ফিউনারেল প্যারেডে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর প্রধানদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
মরহুম ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামকে তাঁর জন্মস্থান রাজশাহী জেলার একটি কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।
তৌকির ইসলাম ২০১৬ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেন এবং ২০১৯ সালে জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন। তিনি বিভিন্ন স্কোয়াড্রনে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন এবং দেশ-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ কোর্স সম্পন্ন করেন। তার প্রশিক্ষণ ও সাহসিকতা দেশের জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মোঃ তৌকির ইসলামের এই আত্মত্যাগ জাতির জন্য এক অনুকরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে।