বাংলাদেশে বিচারব্যবস্থা সংস্কারে সুইডেন ও ইউএনডিপির নতুন চুক্তি স্বাক্ষর

বাংলাদেশে বিচারব্যবস্থা সংস্কারে সুইডেন ও ইউএনডিপির নতুন চুক্তি স্বাক্ষর

বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা সংস্কারের চলমান প্রচেষ্টায় নতুন মাত্রা যোগ করতে এক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সুইডেন দূতাবাস ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। এই চুক্তির আওতায় সুইডেন দ্বিতীয় দফায় ৫ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা অনুদান দিচ্ছে “সাপোর্ট টু ট্রান্সফরমিং বাংলাদেশ’স রুল অব ল সার্ভিসেস” প্রকল্পে।

ঢাকায় আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুইডেন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মারিয়া স্ট্রিডসম্যান এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদসহ সুপ্রিম কোর্ট ও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তির আওতায় ইউএনডিপির “ইন্টিগ্রেটেড সাপোর্ট ফর অ্যাডভান্সিং রিফর্মস অ্যান্ড ডেমোক্রেটিক গভর্নেন্স” কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, প্রসিকিউশন সংস্কার, নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করা হবে।

মারিয়া স্ট্রিডসম্যান বলেন, “আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী করতে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে সুইডেন আবারও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এমন একটি বিচারব্যবস্থা গঠনে পাশে থাকতে চাই, যা স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং সকল নাগরিকের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক।”

ইউএনডিপির প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, “২০২৪ সালের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে তরুণদের সাহসী প্রতিরোধ বিচার সংস্কারের যে দাবি তুলেছিল, এই প্রকল্প সেই প্রত্যাশার প্রতি একটি অঙ্গীকার। এই উদ্যোগ বাংলাদেশের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়ভিত্তিক ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা।”

তিনি আরও জানান, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নীতিমালা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে, সুপ্রিম কোর্টের হটলাইন পরিষেবা আরও কার্যকর করা এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসকে একটি পেশাদার প্রসিকিউশন সার্ভিস হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

প্রকল্পটি ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, আইনি সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জেন্ডার-সংবেদনশীল সংস্কার কার্যক্রমের ওপর জোর দেবে। এতে নাগরিক সমাজ, তরুণ প্রজন্ম, আইনজীবী ও গণমাধ্যমের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।

সুইডেন-ইউএনডিপি’র এই যৌথ উদ্যোগ জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ১৬— শান্তি, ন্যায়বিচার এবং শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান— বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *