
সাতক্ষীরার শ্যামনগর–সংলগ্ন পশ্চিম সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক রেখে যাওয়া ৭৮ জন এখনো বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। ঘটনার ৩৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও শনিবার (১০ মে) সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত তাঁরা মান্দারবাড়িয়া বন ক্যাম্পেই অবস্থান করছিলেন।
এর আগে শুক্রবার (৯ মে) ভোরে বঙ্গোপসাগর–সংলগ্ন সুন্দরবনের গভীর অঞ্চলের মান্দারবাড়িয়া চরে কয়েকটি স্পিডবোট থেকে এই ৭৮ জনকে নামিয়ে রেখে যায় বিএসএফ। পরে সকাল ৯টার দিকে বন বিভাগের সদস্যরা তাঁদের উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে আসেন এবং বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে অবহিত করেন।
বন বিভাগের দাবি অনুযায়ী, সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে বিএসএফের রেখে যাওয়া ৭৮ জনই বাংলাদেশের নাগরিক। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এখনো বিষয়টি যাচাই করে দেখছে। শুক্রবার (৯ মে) বিজিবি জানায়, তাঁদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়া বাকি। শনিবার (১০ মে) বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের বিশেষায়িত ইউনিট ‘রিভারাইন বর্ডার গার্ড’ (আরবিজি) এ বিষয়ে তদন্ত করছে এবং বিস্তারিত তথ্য তারাই দেবে।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনের কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে মান্দারবাড়িয়া ক্যাম্পের বনকর্মীরা ৭৮ জনকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে আসেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বন বিভাগের কর্মকর্তারা নিশ্চিত হন যে তাঁরা বাংলাদেশের নাগরিক। এরপর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তাঁরা মান্দারবাড়িয়া ক্যাম্পেই অবস্থান করছিলেন।
সাতক্ষীরার নীলডুমুরে অবস্থানরত ১৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাজিব জানিয়েছেন, সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে বিএসএফের রেখে যাওয়া ৭৮ জনকে নিয়ে পুরো বিষয়টি বিজিবির বিশেষায়িত ইউনিট ‘রিভারাইন বর্ডার গার্ড’ (আরবিজি) দেখছে। তিনি বলেন, “তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে এবং বিস্তারিত তথ্য তারাই দিতে পারবে।” পাশাপাশি সীমান্ত এলাকাজুড়ে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
তবে ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য জানতে বঙ্গোপসাগরে দায়িত্বে থাকা ৮ আরবিজি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুর রউফের সরকারি মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। এমনকি খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
অন্যদিকে, বন বিভাগের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনের কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, আরবিজি কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। তবে, এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।