সুদানে সোনার খনির ধস: নিহত ১১, আহত ৭

সুদানে সোনার খনির ধস: নিহত ১১, আহত ৭

সুদানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী সোনার খনিতে ধসের ঘটনায় অন্তত ১১ জন খনি শ্রমিক নিহত এবং ৭ জন আহত হয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির রাষ্ট্রীয় খনন সংস্থা ‘সুদান মিনারেল রিসোর্সেস কোম্পানি (SMRC)’ রোববার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

সংস্থাটি জানায়, দুর্ঘটনাটি ঘটে রেড সি প্রদেশের মরুভূমি অঞ্চলে অবস্থিত কিরশ আল-ফিল নামক একটি খনিতে, যা আতবারা ও হাইয়ার মধ্যবর্তী সেনা-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অবস্থিত। ধসটি ঘটে একটি ‘কারিগরি খনন শাফটে’, যেখানে ঝুঁকিপূর্ণভাবে সোনার খনন কাজ চলছিল। বিবৃতিতে ধসের নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করা হয়নি।

SMRC জানিয়েছে, সংস্থাটি ইতিপূর্বেই খনিটির কার্যক্রম স্থগিত করেছিল এবং জানিয়ে দিয়েছিল যে, খনির কার্যক্রম জীবনহানির উচ্চ ঝুঁকি তৈরি করছে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধা-সামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF)-এর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে উভয় পক্ষই সোনার ব্যবসাকে যুদ্ধের অর্থায়নের মূল উৎস হিসেবে ব্যবহার করছে। যুদ্ধের আগে সুদানে প্রায় ২০ লাখ মানুষ ছোট ও প্রথাগত খনিতে কাজ করতেন।

যদিও দেশটির অর্থনীতি ইতোমধ্যে ভঙ্গুর ছিল, ২০২৪ সালে সরকার রেকর্ড ৬৪ টন সোনা উৎপাদনের দাবি করেছে। তবে বড় আকারের শিল্প খনি নয়, এই সোনার বেশিরভাগই আসে ছোট ও প্রথাগত খনি থেকে, যেখানে নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা, বরং ব্যবহৃত হয় ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক, যা আশেপাশের এলাকায় রোগবালাই বাড়ায়।

বিভিন্ন সূত্র ও এনজিওগুলোর মতে, এসব সোনা চোরাপথে চাদ, দক্ষিণ সুদান ও মিসরে পাচার হয়ে শেষ পর্যন্ত পৌঁছে যায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই), যা বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম স্বর্ণ রপ্তানিকারক দেশ।

সুদানের চলমান যুদ্ধ বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাস্তুচ্যুতি সংকট তৈরি করেছে। ইতোমধ্যে দেশটিতে ১০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং আরও ৪ মিলিয়ন মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছেন। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২৫ মিলিয়ন মানুষ এখন চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *