
২০২৪ সালের রাজনৈতিক পালাবদলের পর ভারতে দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন বাংলাদেশে ফেরত আসেন। দেশব্যাপী আলোচিত এই অপরাধী রাজধানী ঢাকায় নিজের পুরনো সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক পুনর্গঠনের চেষ্টা শুরু করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিনি নতুন সদস্য নিয়োগ ও আধুনিক অস্ত্র সংগ্রহে মনোনিবেশ করেন।
রাজধানীতে কালোবাজারে অস্ত্রের মূল্য বেশি হওয়ায় সুব্রত সীমান্তবর্তী কুষ্টিয়া জেলায় গিয়ে অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে যোগ দেন আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদ। চলতি বছরের ২৭ মে ভোরে কুষ্টিয়ায় সেনাবাহিনীর একটি অভিযানে সুব্রত ও মাসুদ গ্রেপ্তার হন।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় এক সহযোগীর বাসায় তারা নিয়মিত বৈঠক করতেন এবং সেখানেই অস্ত্র ও অপরাধ সংগঠনের সরঞ্জাম রাখতেন। এরপর পুলিশ ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে এস এম শরীফ ও আরাফাত ইবনে নাসিরকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৫টি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড তাজা গুলি এবং একটি স্যাটেলাইট ফোন।
এই ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়। পরে তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম ৭ জুলাই চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করেন।
তদন্তে উঠে আসে, সুব্রত ভারতে ২০-২৫ বছর আত্মগোপনে ছিলেন। ২০০১ সালে সরকার যে ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করেছিল, সেখানে সুব্রত ও মাসুদের নাম ছিল। সে সময় তাঁরা ‘সেভেন স্টার গ্রুপ’ নামে ভয়ংকর অপরাধী সংগঠন চালাতেন। তাদের বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, উদ্ধার করা অস্ত্রগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী এবং বিদেশি হওয়ায় মূল্যবান। এসব অস্ত্র সংগ্রহ করেই সুব্রত বাংলাদেশে পুনরায় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক চালুর পরিকল্পনা করছিলেন।
সুব্রত বাইনের আইনজীবীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মন্তব্য দিতে রাজি হননি।