দক্ষিণ এশিয়ায় অভ্যন্তরীণ চেয়ে বহিরাগত সংস্কারের চাপ বেশি, সানেমের সম্মেলনে বিশ্লেষকদের মতামত।

দক্ষিণ এশিয়ায় অভ্যন্তরীণ চেয়ে বহিরাগত সংস্কারের চাপ বেশি, সানেমের সম্মেলনে বিশ্লেষকদের মতামত।

দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য, অর্থনীতি ও রাজনীতিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার বিভিন্ন কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর প্রভাবের কারণে সংস্কারের উদ্যোগ সফল হয় না। এই গোষ্ঠীগুলো নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য পরিবর্তন হতে দেয় না।

অনেক ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা ও চাপ বহির্বিশ্ব থেকে বেশি আসে, অথচ স্থানীয় পর্যায়ে সে ধরনের উদ্যোগের অভাব দেখা যায়। কিছু বিশ্লেষকের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক কাঠামো মূলত মধ্যবাম ঘরানার হওয়ায় বাজারের চাহিদা অনুযায়ী অর্থনীতি ও বাণিজ্যে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার সম্ভব হয় না।

শুক্রবার সন্ধ্যায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের অষ্টম বার্ষিক অর্থনীতিবিদ সম্মেলনের ভার্চ্যুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব বিষয় তুলে ধরেন। সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল “দক্ষিণ এশিয়ায় ভূ–অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতার প্রভাব”। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান। বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ ফান্সিসকো ডি ওহনসোর্জ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তার উপস্থাপনায় দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য উদারীকরণ ও বাজার উন্মুক্তকরণের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ভূরাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতার ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কমছে।

দক্ষিণ এশিয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সংযোগ তুলনামূলকভাবে কম থাকলেও তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এর পরিমাণ যথেষ্ট নয়, ফলে পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা থেকে তারা উল্লেখযোগ্য সুবিধা নিতে পারছে না।

ফান্সিসকোর মতে, এই বাস্তবতায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উচিত বাজারকে যতটা সম্ভব উন্মুক্ত করা, কারণ ভবিষ্যতে কোন দেশ কৌশলগতভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠবে, তা আগেভাগে বলা সম্ভব নয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেন। তবে তিনি জোর দেন যে এই প্রক্রিয়াটি বহুপক্ষীয় সহযোগিতার মাধ্যমে বিবেচনা করা উচিত। তিনি প্রশ্ন তোলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলো পর্যাপ্ত অর্থায়ন পাচ্ছে কি না এবং তাদের উদ্বেগ ও আপত্তিগুলো যথাযথভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে কি না। তার মতে, উপস্থাপনায় বহুপক্ষীয় কাঠামোর বিষয়টি স্পষ্টভাবে উঠে আসেনি।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, সহযোগিতার প্রয়োজন শুধু বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়; বরং সব খাতেই এটি জরুরি। বিশেষভাবে, উদীয়মান দেশগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি শুধুমাত্র বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানো হয়, কিন্তু সেই দেশগুলো শেষ পর্যন্ত আমদানিনির্ভর হয়ে পড়ে, তাহলে এর বাস্তব সুফল পাওয়া সম্ভব হবে না।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আইসিআরআইইআর-এর পরিচালক দীপক মিশ্র দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে পূর্ব এশিয়ার তুলনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, পূর্ব এশিয়ার প্রায় সব দেশই চীনের সঙ্গে কোনো না কোনো সীমান্তবিরোধে জড়িত, তবুও তাদের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য বিদ্যমান। অর্থাৎ, তারা রাজনীতিকে অর্থনীতি থেকে আলাদা রাখতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ায় ঠিক বিপরীত চিত্র দেখা যায়—এখানে রাজনীতি অর্থনীতির ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। তার পরামর্শ, দক্ষিণ এশিয়ার নীতিনির্ধারকদের আরও নমনীয় ও গতিশীল হওয়া উচিত। পাশাপাশি, নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে কেবল বুদ্ধিবৃত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর না করে, উদ্যোক্তাবান্ধব দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা প্রয়োজন।

দীপক মিশ্র আরও বলেন, বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থা বর্তমানে দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে বহুপক্ষীয় সংস্থাগুলো থেকে সরে আসছে বা সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তাতে ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়ছে।

জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সান্তাইয়ানান দেবরাজন চীন ও তাইওয়ানের উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই দুই দেশ পরস্পরের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও বাণিজ্যিকভাবে তাদের মধ্যে কোনো বাধা নেই। চীন এমনকি তাইওয়ানের বৃহত্তম বিনিয়োগকারীও। এটি প্রমাণ করে যে, অর্থনীতিকে রাজনীতি থেকে পৃথক করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি স্বাধীনভাবে কাজ করছে, যদিও একসময় এগুলো রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তার মতে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ক্ষেত্রেও এমন নীতি গ্রহণ করা জরুরি, যাতে অর্থনীতি রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে থেকে কার্যকরভাবে পরিচালিত হতে পারে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, সহযোগিতার প্রয়োজন শুধু বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়; বরং সব খাতেই এটি জরুরি। বিশেষভাবে, উদীয়মান দেশগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি শুধুমাত্র বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানো হয়, কিন্তু সেই দেশগুলো শেষ পর্যন্ত আমদানিনির্ভর হয়ে পড়ে, তাহলে এর বাস্তব সুফল পাওয়া সম্ভব হবে না।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আইসিআরআইইআর-এর পরিচালক দীপক মিশ্র দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে পূর্ব এশিয়ার তুলনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, পূর্ব এশিয়ার প্রায় সব দেশই চীনের সঙ্গে কোনো না কোনো সীমান্তবিরোধে জড়িত, তবুও তাদের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য বিদ্যমান। অর্থাৎ, তারা রাজনীতিকে অর্থনীতি থেকে আলাদা রাখতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ায় ঠিক বিপরীত চিত্র দেখা যায়—এখানে রাজনীতি অর্থনীতির ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। তার পরামর্শ, দক্ষিণ এশিয়ার নীতিনির্ধারকদের আরও নমনীয় ও গতিশীল হওয়া উচিত। পাশাপাশি, নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে কেবল বুদ্ধিবৃত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর না করে, উদ্যোক্তাবান্ধব দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা প্রয়োজন।

দীপক মিশ্র আরও বলেন, বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থা বর্তমানে দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে বহুপক্ষীয় সংস্থাগুলো থেকে সরে আসছে বা সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তাতে ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়ছে।

জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সান্তাইয়ানান দেবরাজন চীন ও তাইওয়ানের উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই দুই দেশ পরস্পরের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও বাণিজ্যিকভাবে তাদের মধ্যে কোনো বাধা নেই। চীন এমনকি তাইওয়ানের বৃহত্তম বিনিয়োগকারীও। এটি প্রমাণ করে যে, অর্থনীতিকে রাজনীতি থেকে পৃথক করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি স্বাধীনভাবে কাজ করছে, যদিও একসময় এগুলো রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তার মতে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ক্ষেত্রেও এমন নীতি গ্রহণ করা জরুরি, যাতে অর্থনীতি রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে থেকে কার্যকরভাবে পরিচালিত হতে পারে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, সহযোগিতার প্রয়োজন শুধু বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়; বরং সব খাতেই এটি জরুরি। বিশেষভাবে, উদীয়মান দেশগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি শুধুমাত্র বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানো হয়, কিন্তু সেই দেশগুলো শেষ পর্যন্ত আমদানিনির্ভর হয়ে পড়ে, তাহলে এর বাস্তব সুফল পাওয়া সম্ভব হবে না।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আইসিআরআইইআর-এর পরিচালক দীপক মিশ্র দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে পূর্ব এশিয়ার তুলনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, পূর্ব এশিয়ার প্রায় সব দেশই চীনের সঙ্গে কোনো না কোনো সীমান্তবিরোধে জড়িত, তবুও তাদের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য বিদ্যমান। অর্থাৎ, তারা রাজনীতিকে অর্থনীতি থেকে আলাদা রাখতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ায় ঠিক বিপরীত চিত্র দেখা যায়—এখানে রাজনীতি অর্থনীতির ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। তার পরামর্শ, দক্ষিণ এশিয়ার নীতিনির্ধারকদের আরও নমনীয় ও গতিশীল হওয়া উচিত। পাশাপাশি, নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে কেবল বুদ্ধিবৃত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর না করে, উদ্যোক্তাবান্ধব দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা প্রয়োজন।

দীপক মিশ্র আরও বলেন, বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থা বর্তমানে দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে বহুপক্ষীয় সংস্থাগুলো থেকে সরে আসছে বা সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তাতে ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়ছে।

জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সান্তাইয়ানান দেবরাজন চীন ও তাইওয়ানের উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই দুই দেশ পরস্পরের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও বাণিজ্যিকভাবে তাদের মধ্যে কোনো বাধা নেই। চীন এমনকি তাইওয়ানের বৃহত্তম বিনিয়োগকারীও। এটি প্রমাণ করে যে, অর্থনীতিকে রাজনীতি থেকে পৃথক করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি স্বাধীনভাবে কাজ করছে, যদিও একসময় এগুলো রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তার মতে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ক্ষেত্রেও এমন নীতি গ্রহণ করা জরুরি, যাতে অর্থনীতি রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে থেকে কার্যকরভাবে পরিচালিত হতে পারে।

তিন দিনব্যাপী সানেমের এই অর্থনীতিবিদ সম্মেলন ২৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *