
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পূর্ব আফ্রিকার দেশ মাদাগাস্কারে জেন-জিদের (Gen Z) তীব্র বিক্ষোভের মুখে নত স্বীকার করে সরকার ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোয়েলিনা। বিদ্যুৎ ও পানি সংকটের জেরে শুরু হওয়া এই আন্দোলন প্রাণহানি ও সহিংসতায় গড়ায়, যার ফলস্বরূপ গত কয়েক বছরের মধ্যে দেশটিতে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দেখা যায়।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোয়েলিনা এই ঘোষণা দেন বলে বিবিসি ও আলজাজিরা জানিয়েছে।
বাংলাদেশ, নেপাল, ফিলিপাইন ও পূর্ব তিমুরের পর মাদাগাস্কারও জেন-জিদের কাছে মাথানত করল। প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা জনসাধারণের ক্ষোভ স্বীকার করেছেন এবং তাঁর সরকারের ব্যর্থতার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক টেলিভিজিওনা মালাগাসিতে (টিভিএম) তিনি বলেন, “সরকারের সদস্যরা যদি তাদের ওপর অর্পিত কাজগুলো সম্পাদন না করে থাকেন তবে আমরা তা স্বীকার করছি এবং ক্ষমা চাইছি।” তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং পানি সরবরাহ সমস্যার কারণে সৃষ্ট “ক্ষোভ, দুঃখ এবং অসুবিধাগুলো আমি বুঝতে পারি। আমি আহ্বান শুনেছি, আমি কষ্ট অনুভব করেছি।”
তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই তৃতীয় দফার বিক্ষোভ থেকে দেশটির সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ওঠে। সোমবার রাজধানী আন্তানানারিভোতে বিক্ষোভকারী তরুণ-তরুণীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে।
এদিকে, জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক জানিয়েছেন, এই বিক্ষোভে অন্তত ২২ জন নিহত এবং ১০০ জন আহত হয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ও প্রাণঘাতি গুলি ছুড়ে। তবে মাদাগাস্কারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, বিক্ষোভ ঘিরে ব্যাপক গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
বলা হচ্ছে, আফ্রিকার কেনিয়া ও এশিয়ার দেশ নেপালের ‘জেন-জি’ আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মাদাগাস্কারের তরুণ-তরুণীরা সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভ শুরু করেছেন।
প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা অস্থিরতার সময় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং বলেছেন যে তরুণদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।