
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার আইডিয়াল মাদরাসার অধ্যক্ষ ও জামায়াত ইসলামীর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন এক শিক্ষার্থীর মা। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মোসাম্মৎ শিল্পী লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, তার সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে মাদরাসার অধ্যক্ষ অফিসে ডেকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন এবং ঘটনা গোপন রাখতে ছুরি দিয়ে হত্যার হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা বলেন, “আমি স্থানীয় একটি হাসপাতালে সামান্য চাকরি করি। আমার মেয়েকে ২৩ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী অফিসে ডেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন। মেয়েটি ভয়ে কাউকে কিছু বলেনি। ৩০ সেপ্টেম্বর হঠাৎ মাদরাসা থেকে ফোন আসে—আমার মেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে।”
মাদরাসায় গিয়ে তিনি জানতে পারেন, এক সপ্তাহ আগে তার মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা। বর্তমানে মেয়েটি নবাবগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মা জানান, “সে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে, কিছুক্ষণ পরপর অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে দ্রুত পদচ্যুত করার দাবি জানান এবং ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানান। পাশাপাশি মেয়ের নিরাপত্তা, সামাজিক মর্যাদা ও মানসিক সহায়তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী বলেন, “প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়েছে। আমার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই অপপ্রচার।”
এদিকে, বুধবার রাতে ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক হাসপাতালে গিয়ে শিক্ষার্থীর খোঁজ নেন। তিনি প্রশাসনের প্রতি সুষ্ঠু তদন্তের আহ্বান জানান।
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, “সংবাদ পেয়ে আমি হাসপাতালে গিয়ে ছাত্রীর খবর নিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা দ্রুত তদন্ত ও দোষীর শাস্তি দাবি করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, তবে অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।