
স্বাস্থ্য খাতের আলোচিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে ৭৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. সাব্বির ফয়েজের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
গত ১০ সেপ্টেম্বর রাতে নিউমার্কেট এলাকা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মিঠুকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে দুদকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুদক তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে এবং ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায়। আদালত প্রথমে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলেও পরে রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য করেন।
দুদকের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, মিঠু অসৎ উপায়ে ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণভাবে প্রায় ৭৬ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে জমি, প্লট, ফ্ল্যাট, বাড়ি, গাড়িসহ বিভিন্ন কোম্পানিতে শেয়ার।
দুদক আরও জানায়, মিঠুর বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন মালামাল সরবরাহ এবং উন্নয়নকাজের নামে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে দেশে এবং বিদেশে (আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া) অর্থ পাচারের অভিযোগেরও অনুসন্ধান চলছে। এই সব বিষয়ে তাকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিঠুর মালিকানাধীন ‘লেক্সিকোন মার্চেন্ডাইস’ ও ‘টেকনোক্রেট’ নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন। তার মোট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মূল্য প্রায় ৭৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এছাড়া, তার পারিবারিক ব্যয় হিসেবে আরও প্রায় ৭১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। সব মিলিয়ে, তার মোট সম্পদ ও ব্যয়ের হিসাব দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। অন্যদিকে, বৈধ উপায়ে তার আয়ের পরিমাণ ছিল মাত্র ৭১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ, প্রায় ৭৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে।