
ক্রীড়াবিদ রনজিত দাসের আত্মজৈবনিক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠিত সিলেটে
সিলেটের কিংবদন্তি ক্রীড়াবিদ রনজিত দাসের আত্মজৈবনিক গ্রন্থ ‘ক্রীড়াঙ্গনের ফেলে আসা দিনগুলো’–এর প্রকাশনা অনুষ্ঠান আজ শুক্রবার সম্পন্ন হয়েছে। সিলেট নগরের করেরপাড়া এলাকায় রনজিত দাসের নিজ বাসভবনে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে শুরু হওয়া এই আয়োজনে অতিথিরা স্মৃতিচারণা ও ক্রীড়াঙ্গনে রনজিত দাসের অবদানের কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠান শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্রীড়া সংগঠক মো. ইউসুফ আলী। বক্তব্য দেন পাক্ষিক ক্রীড়াজগত সম্পাদক দুলাল মাহমুদ, ক্রীড়াবিদ এলাম সুলতান, এস এম মান্নান, প্রবীর রঞ্জন দাশ ও নিষেন্দু দেব প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে রনজিত দাস নিজেও উপস্থিত ছিলেন। তাঁর পরিবার থেকে বক্তব্য দেন সন্তান রীমা দাস ও রাজীব দাস। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নাট্যকার মোস্তাক আহমদ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, রনজিত দাস শুধু একজন ক্রীড়াবিদই নন, তিনি একটি সময়ের প্রতিচ্ছবি—যাঁর আত্মজৈবনিক গ্রন্থ বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের জন্য হয়ে থাকবে এক মূল্যবান দলিল।
রনজিত দাস: ক্রীড়াঙ্গনের এক জীবন্ত কিংবদন্তিকে ঘিরে স্মৃতিচারণ ও আত্মজীবনীর প্রকাশনা
সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে কিংবদন্তি ক্রীড়াবিদ রনজিত দাসের আত্মজৈবনিক গ্রন্থ ‘ক্রীড়াঙ্গনের ফেলে আসা দিনগুলো’–এর প্রকাশনা অনুষ্ঠান। শুধু একটি বইয়ের প্রকাশ নয়, এই আয়োজন হয়ে উঠেছিল সিলেটসহ গোটা দেশের ক্রীড়াইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়ের পুনরুজ্জীবন।
অনুষ্ঠানে ক্রীড়াজগত সম্পাদক দুলাল মাহমুদ বলেন, “সারা দেশের ক্রীড়াঙ্গনের একজন মডেল ছিলেন রনজিত দাস। তাঁর আত্মজীবনী বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক ও অনন্য সংযোজন। পাকিস্তান আমলের পূর্ব বাংলার গৌরবময় ক্রীড়াযুগ এই বইয়ে যথাযথ মর্যাদায় স্থান পেয়েছে।”
বক্তারা বলেন, রনজিত দাস কেবল একজন ক্রীড়াবিদ নন, তিনি একাধিক খেলায় দক্ষতা দেখিয়ে নিজেকে গড়ে তুলেছেন ক্রীড়াঙ্গনের বহুমাত্রিক এক প্রতিভা হিসেবে। ফুটবল, হকি ও ক্রিকেট—তিনটি ক্ষেত্রেই তাঁর অসাধারণ নৈপুণ্যের কথা উঠে আসে বক্তাদের কথায়। বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তান ফুটবল দল থেকে তাঁকে বাদ দিয়ে দল গঠনের কথা ভাবাই যেত না।
গোলরক্ষক হিসেবে ফুটবলে রনজিত দাসের খ্যাতি ছিল ঈর্ষণীয়। পাশাপাশি তিনি হকি খেলায়ও সমান দক্ষ ছিলেন। ১৯৫৮ সালে তাঁর নেতৃত্বে আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব ঢাকা ফুটবল লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৬৫ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত তিনি খেলেছেন ঢাকার হকি লিগে। কলকাতা মোহামেডান, ত্রিপুরা একাদশ এবং ঢাকা মোহামেডানের হয়ে খেলেছেন আইএফএ শিল্ডে; ভারতের দিল্লিতে অংশ নিয়েছেন ঐতিহ্যবাহী ডুরান্ড কাপে।
তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান হকি দলের অধিনায়ক এবং পরবর্তীকালে খেলেছেন ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও সোনালী ব্যাংকের হয়ে। স্বাধীনতার পর সিলেট দলের অধিনায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৬ সালে গ্রামীণফোন–প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা এবং ২০০৭ সালে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারে ভূষিত হন।
রনজিত দাসের জীবন কেবল ক্রীড়ানৈপুণ্যের দলিল নয়, এটি একটি সময়ের সাক্ষ্য—যেখানে দেশ, খেলা ও মানুষের প্রতি অঙ্গীকার প্রতিধ্বনিত হয়েছে প্রতিটি অধ্যায়ে।