
সৌরঝড়ের সময় সূর্য থেকে বিশাল পরিমাণ শক্তিশালী প্লাজমা ও চার্জযুক্ত কণার স্রোত মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে। এই স্রোত যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আঘাত হানে, তখন স্যাটেলাইট যোগাযোগ, জিপিএস, রেডিও সিগন্যাল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি নাসা সতর্ক করেছে যে, একাধিক শক্তিশালী সৌরঝড় পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমানে পৃথিবী সূর্যের ১১ বছরের সৌরচক্রের সর্বোচ্চ ক্রিয়াশীল অবস্থায় প্রবেশ করেছে। ফলে সূর্যের সক্রিয় অঞ্চলগুলো আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। গত সপ্তাহেই চলতি বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী সৌরঝড় আঘাত হেনেছে, যার প্রভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে প্রযুক্তি ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনেস্ট্রেশনের স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের (SWPC) তথ্য অনুযায়ী, ১৪ মে এক্স ২.৭ মাত্রার সৌরঝড় রেকর্ড করা হয়। এক্স শ্রেণির সৌরঝড় সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এটি সাধারণত বিরল। সৌরশিখা পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়: A, B, C, M এবং X—যার প্রতিটি পর্যায় আগেরটির চেয়ে ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী।
গত সপ্তাহের এক্স ২.৭ মাত্রার সৌরঝড়ের ফলে পাঁচটি মহাদেশে শর্টওয়েভ রেডিও সেবায় ব্যাঘাত দেখা দেয়। এই ধরনের ঝড়ে সূর্য থেকে এক্স-রে ও চরম অতিবেগুনি রশ্মি নির্গত হয়ে আলোর গতিতে পৃথিবীতে পৌঁছায়। এর ফলে পৃথিবীর উপরের বায়ুমণ্ডল দ্রুত আয়নিত হয়ে উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও তরঙ্গ বিঘ্নিত হয়।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেও একাধিক সৌরঝড় পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে, যা প্রযুক্তিগত পরিকাঠামোর ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।