
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক পদে শূন্যতা থাকায় দ্রুত পদায়ন ও নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা এবং প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়াসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বৈঠকে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা মান উন্নয়ন, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া, বদলির নীতিমালা এবং নারীবান্ধব অবকাঠামোসহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়।
উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় জানান, “বিভিন্ন স্কুলের পারফরম্যান্স যাচাই করে দেখা গেছে, যেসব প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতি ও নেতৃত্ব কার্যকর, সেখানকার শিক্ষার মান তুলনামূলকভাবে উন্নত। বর্তমানে প্রায় ৩২ হাজার প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে।”
তিনি বলেন, শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি দক্ষ নেতৃত্ব নিশ্চিত করা জরুরি। এজন্য স্কুলগুলোর র্যাংকিং করা হচ্ছে এবং পিছিয়ে পড়া বিদ্যালয়গুলোকে উন্নয়নের জন্য বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নিয়োগে অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতাকে গুরুত্ব দিতে হবে। যারা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করছেন, তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। পাশাপাশি তরুণ ও উদ্যমী শিক্ষকদেরও সুযোগ দিতে হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়াটি হতে হবে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ।”
তিনি সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
বদলির বিষয়ে তিনি বলেন, “বর্তমানে অনেক শিক্ষক শহরাঞ্চলে বদলির জন্য তদবির করে থাকেন। এটি বন্ধ করতে সুস্পষ্ট নীতিমালা দরকার। বদলির পুরো প্রক্রিয়াকে একটি সিস্টেমের আওতায় আনতে হবে।”
এছাড়া নারীবান্ধব স্কুল পরিবেশ তৈরিতে ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা পর্ব থেকেই একজন নারী স্থপতিকে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেন তিনি। বলেন, “স্কুল ভবন যেন মেয়েদের জন্য নিরাপদ ও উপযোগী হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।”
অবশেষে, দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধাপে ধাপে ইন্টারনেট সংযোগ ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু করার ওপর জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা।