
সিলেটের পর্যটন কেন্দ্র ‘ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর’ এলাকা থেকে অবৈধভাবে পাথর লুটপাট ঠেকাতে এবং চুরি হওয়া পাথর পুনরুদ্ধারের জন্য ৫ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট সার্কিট হাউজে সিলেট ও বিভাগীয় প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের এক সমন্বয় সভায় এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়। সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৫ দফা সিদ্ধান্ত
সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হলো:
১. জাফলং ইসিএ (Ecologically Critical Area) এলাকা এবং সাদা পাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথ বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।
২. গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্ট যৌথ বাহিনীর তত্ত্বাবধানে সার্বক্ষণিক সক্রিয় থাকবে।
৩. অবৈধ ক্রাশিং মেশিন বন্ধ করার জন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং এর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
৪. পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত সকলকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
৫. চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে হবে।
পাথর লুটপাট
গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তখন স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলো, যেমন জামায়াত, বিএনপি, এনসিপি এবং চরমোনাই পীর ফজলুল হকের দল, পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে বিভিন্ন আন্দোলন ও কর্মসূচি পালন করে। তাদের অভিযোগ ছিল, ভারতের স্বার্থে আগের সরকার পাথর কোয়ারি বন্ধ রেখেছে। এই দাবির আড়ালে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় একটি ‘পাথর খেকো চক্র’ সাদা পাথরের মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থান থেকে শত শত কোটি টাকার পাথর লুট করে নেয়।
সাম্প্রতিক সময়ে পাথর লুটের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও এই ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেন। এরপর নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।