ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে পিতাকে হত্যা, পিবিআইয়ের তদন্তে রহস্য উন্মোচন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে পিতাকে হত্যা, পিবিআইয়ের তদন্তে রহস্য উন্মোচন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক রড ও সিমেন্ট ব্যবসায়ীকে হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রাথমিক তদন্তে চুরির ঘটনা বলে মনে করা হলেও, পিবিআইয়ের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে যে, নিহতের ছেলে ও মামলার বাদী নিজেই তার পিতাকে হত্যা করেছেন।

গত ৩ সেপ্টেম্বর সকালে ফান্দাউক মুন্সীপাড়ার ব্যবসায়ী মোঃ আলম মিয়াকে (৬০) নিজ বাড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তখন বাড়িতে চুরির আলামতও ছিল। ঘটনার তিন দিন পর, ৬ সেপ্টেম্বর নিহতের ছেলে মোঃ মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা চোরদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এজাহারে তিনি দাবি করেন, চোরেরা তার বাবাকে হত্যা করে স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে গেছে। এমনকি, তিনি ঘটনার সময় সিলেটে ছিলেন বলেও মিথ্যা দাবি করেন এবং তার বাবার দ্বিতীয় স্ত্রীকে সন্দেহের তালিকায় রাখেন।

পিবিআই তদন্ত শুরু করে দেখতে পায়, মামলার বাদী মাহমুদুল হাসানের সিলেট থাকার দাবিটি মিথ্যা। এরপর ১০ সেপ্টেম্বর তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই তিনি তার বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

মাহমুদুল হাসানের জবানবন্দি অনুযায়ী, পারিবারিক কলহ ও অপমানের জেরে তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটান। তিনি সিলেট যাওয়ার মিথ্যা অজুহাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে রাতে পেছনের দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকে লুকিয়ে ছিলেন। এরপর রাতে বাবাকে ডেকে এনে ঘুমিয়ে পড়ার পর একটি লোহার পাইপ দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করেন।

হত্যার পর মাহমুদুল চুরির ঘটনা প্রমাণ করতে একটি নাটক সাজান। তিনি বাবার মোবাইল সেট দুটি নিয়ে নদীতে ফেলে দেন এবং স্ত্রীর স্বর্ণালংকারগুলো সরিয়ে রেখে ২ লাখ ৪৮ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। তার দেখানো স্থান থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লোহার পাইপটিও উদ্ধার করা হয়েছে। আসামি আদালতে স্বেচ্ছায় তার অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। এই মামলার তদন্ত এখনও চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *