ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের ঘোষণা

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের ঘোষণা

অবশেষে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার রোববার এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দিতে পারেন বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির সরকারি সূত্র। এই সিদ্ধান্ত ব্রিটিশ পররাষ্ট্রনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন, কারণ এতদিন ধরে যুক্তরাজ্য বলে আসছিল যে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি আসবে কেবল একটি শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে।

বিবিসি-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, ইসরায়েল যদি সেপ্টেম্বরের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং দীর্ঘমেয়াদি শান্তি চুক্তির প্রতিশ্রুতি না দেয়, তবে যুক্তরাজ্য তাদের অবস্থান পরিবর্তন করবে। সম্প্রতি গাজার ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি এবং সেখানকার জনগণের ওপর চলা সহিংসতা এই সিদ্ধান্তের একটি প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। জাতিসংঘের এক কর্মকর্তার মতে, গাজায় ইসরায়েলের সর্বশেষ স্থল অভিযান ছিল “বিধ্বংসী”, যার কারণে লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

এছাড়াও, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি সম্প্রসারণকেও যুক্তরাজ্যের এই সিদ্ধান্তের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ব্রিটিশ বিচারমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণ দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনাকে নষ্ট করছে।

যুক্তরাজ্যের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে ইসরায়েলি সরকার। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই পদক্ষেপ “সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করবে”। তবে ব্রিটিশ মন্ত্রীরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি শান্তি চুক্তির আশা বাঁচিয়ে রাখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া একটি নৈতিক দায়িত্ব।

এদিকে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস যুক্তরাজ্যের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। অন্যদিকে, কনজারভেটিভ নেতা কেমি বাদেনক এই মুহূর্তে স্বীকৃতি দেওয়াকে “সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করার সমান” বলে মন্তব্য করেছেন।

ইতিমধ্যে পর্তুগাল, ফ্রান্স, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো অনেক দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে, স্পেন, আয়ারল্যান্ড এবং নরওয়ে গত বছর এই পদক্ষেপ নিয়েছিল। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রায় ৭৫ শতাংশই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। যদিও ফিলিস্তিনের নিজস্ব কোনো নির্ধারিত সীমানা, রাজধানী বা সেনাবাহিনী নেই, তাই এই স্বীকৃতি মূলত একটি প্রতীকী পদক্ষেপ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *