ঢাকা, ২৮ মে ২০২৫
‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর অনলাইন শপ’, ‘চাঁদপুর ইলিশ বাজার’, ‘চাঁদপুর ইলিশ ঘাট’ নামের কয়েকটি ফেসবুক পেজে সস্তা দামে ইলিশ বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
এই চক্রটি ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অগ্রিম টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ খুলনা, যশোর ও নড়াইল এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে চক্রটির আটজন সদস্যকে আটক করে।


গ্রেফতারকৃত প্রতারকরা কারা?
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন:
১. আনাছ শেখ (২১)
২. কামাল শেখ (২১)
৩. ইয়ানুর মোল্লা (২১)
৪. জোবায়ের হোসেন (২৩)
৫. রুবেল শেখ (২৯)
৬. সাগর হোসেন (২৩)
৭. মোঃ আলীনূর ইসলাম (১৮)
৮. শরিফুল ইসলাম (২১)
তাদের কাছ থেকে ২৫টি মোবাইল ফোন এবং ৭০টি ভুয়া নিবন্ধিত সিমকার্ড জব্দ করা হয়েছে।
প্রতারণার কৌশল কী ছিল?
ডিবি-সাইবার টিম জানায়, এই চক্রটি বিভিন্ন জনপ্রিয় ই-কমার্স পেইজের ছবি ব্যবহার করে নিজেদের ভুয়া পেইজ তৈরি করতো। এরপর তাজা চাঁদপুরি ইলিশ সুলভ মূল্যে সরবরাহের ঘোষণা দিয়ে ফাঁদ পাতত।
একবার গ্রাহক বিশ্বাস করে অর্ডার করলে, তারা বিকাশ বা নগদের নম্বরে অগ্রিম টাকা চেয়ে নিত। টাকা নেওয়ার পর আর কোনো যোগাযোগ রাখতো না বা ইলিশ সরবরাহ করতো না।
চক্রটির মূল সংগঠক আনাছ শেখ ও শরিফুল ইসলাম, যারা ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য অন্যদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করতো এবং কিছু অসাধু মোবাইল অপারেটর ও মোবাইল ব্যাংকিং কর্মীদের সহায়তায় এই জালিয়াতি চালাত।
একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু
২০২৪ সালের ২০ নভেম্বর মোঃ মাসুম বিল্লাহ নামের একজন ভুক্তভোগী ‘চাঁদপুর ইলিশ বাজার’ পেইজে ১৫ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে ইলিশ অর্ডার করেন। পণ্য না পেয়ে তিনি খিলগাঁও থানায় অভিযোগ দায়ের করলে সেটি পরবর্তীতে ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগে হস্তান্তর করা হয়।
তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত চালিয়ে চক্রটির অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালানো হয়।
আরও অভিযোগ তদন্তাধীন
চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এই পদ্ধতিতে অনলাইন প্রতারণা করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে ডিবির তদন্তে উঠে এসেছে। ডিএমপির বিভিন্ন থানায় তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরি রয়েছে, যেগুলো তদন্তাধীন।
নাগরিকদের জন্য ডিএমপির বার্তা
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সকল অনলাইন ক্রেতাকে অপরিচিত পেইজ থেকে কেনাকাটায় সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষ করে অগ্রিম অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে বিক্রেতার বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি।