
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ প্রকল্পে অতি গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন তিন কাজের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ৫৮৫ কোটি ২৯ লাখ টাকার ক্ষতির অভিযোগে তৎকালীন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত বৃহস্পতিবার দুদকের ঢাকা-১ কার্যালয়ে দায়ের হওয়া এ মামলার অন্যান্য আসামি হলেন সেতু কর্তৃপক্ষের সাবেক সচিব/নির্বাহী পরিচালক খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী কবির আহমদ এবং সাবেক যুগ্ম সচিব/পরিচালক আলীম উদ্দিন আহমেদ।
মামলার অভিযোগ
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকল্পের নেগোসিয়েশন কমিটি নির্ধারিত মূল্য উপেক্ষা করে এবং বিদেশি বিশেষজ্ঞদের কোনো সুপারিশ ছাড়াই তিনটি কাজ অনুমোদন করা হয়। কাজগুলো হলো—
- পরিষেবা এলাকা নির্মাণ
- অতিমূল্যে পর্যবেক্ষণ সফটওয়্যার তৈরি
- একটি টাগ বোট অন্তর্ভুক্তি
বিদেশি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সুলিভান অ্যাসোসিয়েটসের নির্বাহী পরিচালক অ্যান্থনি সুলিভানসহ অন্যরা এ বিষয়ে কোনো সুপারিশ দেননি। সরকারি ক্রয় আইন ভঙ্গ করে পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়ে আর্থিক সুবিধা নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
প্রকল্পের বাস্তবতা
২০১০ সালের ৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের ঘোষণা দেন। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ও অরূপ-হংকং জেভি ২০১৩ সালের আগস্টে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার প্রতিবেদন জমা দেয়।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত টানেলে মাত্র ২৪ লাখ ৫৫ হাজার ৮৭৯টি যানবাহন চলাচল করেছে, যা সম্ভাব্যতা সমীক্ষার মাত্র ১৩.৫৯% সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। এ সময়ে টোল থেকে আয় হয়েছে ৬৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা, অথচ টানেল রক্ষণাবেক্ষণে খরচ হয়েছে ২০৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ফলে প্রতি মাসে গড়ে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে। দুদকের অভিযোগ, আসামিরা ইচ্ছাকৃতভাবে অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে প্রকল্প অনুমোদন করিয়েছেন।
ইসলামী ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগে তিন মামলা
প্রতারণা, জালিয়াতি ও ভুয়া কোম্পানির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আরও তিনটি মামলা করেছে দুদক। বৃহস্পতিবার দুদকের ঢাকা-১ কার্যালয়ে এসব মামলা দায়ের হয়।
প্রথম মামলায় ১ হাজার ৭৭ কোটি ১১ লাখ টাকা, দ্বিতীয় মামলায় ৫২১ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং তৃতীয় মামলায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রথম দুই মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিফতাহ উদ্দীন, সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দীন, শব মেহের স্পিনিং মিলস লিমিটেডের এমডি মশিউর রহমানসহ মোট ৪০ জন। তৃতীয় মামলায় আসামি তিনজন।