
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ধর্মস্থল শহরে শতাধিক নারীর ওপর ধর্ষণ ও হত্যার পর দেহ মাটিচাপা দেওয়ার অভিযোগ করা ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার এক এসআইটি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিকে “মিথ্যা অভিযোগ” দায়ে আটক করা হয়েছে। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
ধর্মস্থল শহরটি প্রাচীন মন্দিরের জন্য পরিচিত, যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার তীর্থযাত্রী ভ্রমণ করেন। সাবেক পরিচ্ছন্নকর্মী একজন জানিয়েছেন, ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তার কর্মকালীন সময়ে তাকে এমন কাজের সঙ্গে জড়িত হতে হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, নারীদের প্রথমে ধর্ষণ করা হতো এবং পরে হত্যা করা হতো। অভিযোগ অনুযায়ী, অনেকেই অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন।
জুলাই মাসে ওই ব্যক্তি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে জবানবন্দি দেন। আদালতে হাজির হওয়ার সময় তার ব্যাগ থেকে একটি মানুষের খুলি বের হয়, যা তিনি দাবি করেন প্রমাণ হিসেবে।
সরকার এই অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করে। তদন্তে দেখা যায়, খুলি সেই স্থান থেকে উদ্ধার হয়নি যা সাবেক কর্মী চিহ্নিত করেছিলেন। শনিবার তাকে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।
SIT দল কয়েক সপ্তাহ ধরে ধর্মস্থল ও আশেপাশের এলাকায় খননকাজ চালায়। সাবেক পরিচ্ছন্নকর্মী মোট ১৩টি স্থানের উল্লেখ করেছিলেন। তদন্তে দুটি স্থানে মানবদেহের কিছু অংশ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে একটি খুলি ও প্রায় ১০০ হাড়ের টুকরো রয়েছে। ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে এখনও কার দেহাবশেষ তা নির্ধারণ করা যায়নি।
মন্দিরের প্রধান প্রশাসক বীরেন্দ্র হেগড়ে এক বিবৃতিতে জানান, তদন্তের জন্য সরকারের নির্দেশে SIT গঠন করা হয়েছে এবং মন্দির প্রশাসন সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে। তিনি বলেন, “নিষ্পক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সত্য বেরিয়ে আসবে।” তবে হেগড়ে সাবেক পরিচ্ছন্নকর্মীর দাবিকে ভিত্তিহীন দাবি করেছেন।
রাজনীতিতেও বিষয়টি তীব্র আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিরোধী বিজেপি নেতা অভিযোগকে ‘অপপ্রচার’ হিসেবে উল্লেখ করেন, আর শাসক কংগ্রেস সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর বলেন, “সত্য প্রকাশিত হওয়া উচিত। কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।”
উল্লেখ্য, ওই ব্যক্তির পরিচয় এবং চেহারা এখনও গোপন রাখা হয়েছে। তাকে জনসমক্ষে কালো পোশাক, হুড এবং মুখোশসহ হাজির করা হয়েছে।