
বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় একটি মন্দির এবং দুটি মসজিদের জন্য জমি বরাদ্দ দিয়েছে। রেলওয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে জমি বরাদ্দের এই উদ্যোগ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ।
আজ বুধবার রেলভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে জমির বরাদ্দপত্র হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন, ঢাকার বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার মো. মহিউদ্দিন আরিফসহ পূজা কমিটি, হিন্দু মহাজোট, স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী।
বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ
বাংলাদেশ রেলওয়ে নির্ধারিত প্রতীকী মূল্যের বিনিময়ে জমি বরাদ্দ দিয়েছে নিম্নলিখিত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে:
- খিলক্ষেত রেলওয়ে জামে মসজিদ: ০.২০১১ একর (৮,৭৬০ বর্গফুট)
- আন-নূর জামে মসজিদ: ০.০৫৫২ একর (২,৪০৫ বর্গফুট)
- খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দির: ০.০৫৬২ একর (২,৪৫০ বর্গফুট)
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন,
“মন্দির ও মসজিদের জমি বরাদ্দ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহযোগিতা করার মধ্য দিয়ে সামাজিক শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখা সম্ভব।”
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন,
“বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের রোল মডেল। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে এই ঐক্যের সংস্কৃতি আরও সুদৃঢ় হবে। যারা ধর্মের নামে অশান্তি সৃষ্টি করতে চায় তারা আসলে অপরাধী, তাদের কোনো ধর্মীয় পরিচয় নেই।”
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন,
“রেলওয়ের এই উদ্যোগ ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে বড় ভূমিকা রাখবে।”
এছাড়া মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব এই উদ্যোগকে “ঐতিহাসিক” আখ্যায়িত করে রেল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
গত বছর দুর্গাপূজার সময়ে রেলের জমিতে অস্থায়ী মণ্ডপ নির্মাণ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে এবার মন্দির ও মসজিদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে জমি বরাদ্দ দিয়ে রেলওয়ে নিশ্চিত করেছে যে ভবিষ্যতে এ ধরনের জটিলতা আর হবে না।