
কসোভো প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত লুলজিম প্লানা আজ বিকেলে স্টেট গেস্ট হাউস যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। রাষ্ট্রদূত প্লানাকে তার নতুন নিয়োগের জন্য প্রধান উপদেষ্টা আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লবের চেতনার আলোকে কসোভোর জনগণের স্বাধীনতা, শান্তি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞার প্রশংসা করেন।
প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রদূত প্লানা কসোভোকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “১৯৯০-এর দশকের শেষভাগে এই অঞ্চলে সংঘটিত সশস্ত্র সংঘাতের পর কসোভোর পুনর্গঠনে গ্রামীণ কসোভোর অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশকে আমরা আমাদের মূল্যবান অংশীদার মনে করি এবং প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত প্রতিজ্ঞার প্রতি আমার গভীর সম্মান রয়েছে।”
গ্রামীণ কসোভো, যা ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং বর্তমানে দেশের ২১৯টি গ্রাম ও ২০টি পৌরসভায় কাজ করে, মূলত একটি মাইক্রোক্রেডিট প্রতিষ্ঠান। এর ঋণগ্রহীতাদের প্রায় ৯৭ শতাংশ নারী। এটি গ্রামীণ ব্যাংকের মত বাংলাদেশি মাইক্রোক্রেডিট প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত।
প্রধান উপদেষ্টা সাক্ষাৎকারে বলেন, “সেই সময় কসোভো একটি বিধ্বস্ত এলাকা ছিল। সেখানে মুদ্রা বা ব্যাংকিং ব্যবস্থা ছিল না। আমরা সেখানে স্ক্র্যাচ থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। এটি ছিল এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।”
আলোচনায় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। প্রধান উপদেষ্টা প্রস্তুত গার্মেন্টস, ফার্মাসিউটিক্যালস, চামড়া ও পাটের পণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং হালকা প্রকৌশল খাতসহ বিভিন্ন সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারের কথা বলেন। তিনি কসোভো থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত প্লানা উভয় দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক গড়ার গুরুত্বে জোর দিয়ে চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর সমর্থন দেন।
সদস্য দেশের জনমানুষের মধ্যে সংযোগ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তাও প্রধান উপদেষ্টা তুলে ধরেন এবং কসোভোয় বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগ সহজ করার জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ, ফেলোশিপ ও একাডেমিক অনুদান প্রদানসহ ভর্তির সুযোগ বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন।