সেনবাগ, নোয়াখালী, দেশীবার্তা।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় বিএনপির তিনটি পৃথক গ্রুপ আলাদাভাবে বিজয় শোভাযাত্রা ও সমাবেশ আয়োজন করেছে। একই দিনে একই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে এমন বিভাজন স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
মঙ্গলবার বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে সেনবাগ শহরের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির তিনটি পক্ষ আলাদা শোভাযাত্রা ও সমাবেশ করে। এদিন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও কর্মসূচি পালন করলেও তাদের আয়োজন ছিল সুশৃঙ্খল ও একক নেতৃত্বের আওতায়।
বিএনপির তিনটি কর্মসূচির মধ্যে একটি অনুষ্ঠিত হয় মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সেনবাগ শহরের দক্ষিণ বাজারে জেলা পরিষদ সুপারমার্কেটের সামনে। এই কর্মসূচির আয়োজন করে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের অনুসারী গ্রুপ। সমাবেশ শেষে জয়নুল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে একটি বিজয় শোভাযাত্রা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

বিকেল পাঁচটার দিকে সেনবাগ উপজেলা পরিষদ চত্বর এলাকা থেকে বিজয় শোভাযাত্রা বের করে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমানের অনুসারীরা। শোভাযাত্রা শেষে সেনবাগ থানার সামনে তাঁরা একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কাজী মফিজ বলেন, “২৪ জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আমরা রাজপথে ছিলাম, অথচ যারা সে সময় দেশের বাইরে ছিলেন, আজ তারাই বিজয়ের উৎসব করছেন।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সেনবাগ বিএনপির রাজনীতিতে কাজী মফিজুর রহমান ও জয়নুল আবদিন ফারুকের দ্বন্দ্ব দুই দশকের বেশি সময় ধরে। কাজী মফিজ বিএনপির ক্ষমতার সময় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এক–এগোরোর পরে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

বিকেল চারটার দিকে সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল মান্নানের অনুসারীরা সেনবাগ টেলিফোন ভবন এলাকা থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করেন। শহর ঘুরে শোভাযাত্রাটি প্রেসক্লাব মোড়ে এসে শেষ হয়, যেখানে আয়োজন করা হয় একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ।
অন্যদিকে, তুলনামূলকভাবে নবীন নেতা হলেও আবদুল মান্নান নিজস্ব একটি পক্ষ গড়ে তুলে সেনবাগে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন।
সেনবাগের অন্তত পাঁচজন রাজনৈতিকভাবে সচেতন স্থানীয় বাসিন্দা দেশীবার্তাকে জানান, আওয়ামী লীগের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি না থাকা সত্ত্বেও বিএনপির ভেতরে বিভক্ত হয়ে একই দিনে তিনটি আলাদা কর্মসূচি পালন করাটা দলটির সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দলের স্পষ্ট ইঙ্গিত।