
“নির্বাচন চাই, তবে তড়িঘড়ি নয়—জুলাই সনদ, বিচার ও নির্বাচন একসাথে প্যাকেজ আকারে হতে হবে”—এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
শুক্রবার সকালে যশোর শহরের একটি হোটেলে শহীদ পরিবার ও আহতদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘জুলাই পদযাত্রা’-এর অংশ হিসেবে আয়োজিত এই সভায় তিনি বলেন, “আমাদের আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য নির্বাচন নয়, সংস্কার। কিন্তু কেউ কেউ প্রচার করছেন, আমরা নির্বাচন পেছাতে চাই। এটি সত্য নয়।”
হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন, ৫ আগস্টের আগে যেভাবে রাজনৈতিক ব্যবস্থা ছিল, তা ছিল ত্রুটিপূর্ণ। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত না করে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। ৫ আগস্টকে অনেকে ‘মব’ হিসেবে আখ্যায়িত করলেও, আমরা তা বলছি না। তবে অপরাজনীতির আশঙ্কা আছে।”
নেতাদের বিলাসিতার সমালোচনা
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে হাসনাত বলেন, “জুলাই আন্দোলনে তৃণমূল কর্মীরা রক্ত দিয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। অথচ অনেক শীর্ষ নেতা ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে ব্যবসা করছেন, বিলাসী জীবনযাপন করছেন। এটি ত্যাগের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”
কমিশন নিয়ে সন্দেহ
হাসনাত বলেন, “নির্বাচন কমিশনের একাধিক কর্মকাণ্ড সন্দেহজনক। এসবের বিরুদ্ধে মাঠে আছে ‘জুলাই যোদ্ধারা’। ব্যক্তি পূজার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে গণমুখী নির্বাচন, গণমাধ্যম এবং সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”
তিনি ৩ আগস্ট ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার দাবিতে গণআন্দোলনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
আহতদের চিকিৎসা ও সংবিধান সংশোধনের দাবি
আহতদের চিকিৎসা পর্যাপ্তভাবে না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে হাসনাত বলেন, “স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জুলাই আন্দোলনের স্পিরিট বুঝতে পারছেন না। এনসিপি এই বিষয়ে দায়িত্ব নেবে।”
এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, “জুলাই সনদ লিখিতভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বর্তমানে যে সংবিধান রয়েছে, তা পরিবর্তন না হলে আওয়ামী লীগ চিরস্থায়ী হয়ে যাবে।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপি নেত্রী তাসনিম জারা, নুসরাত তাবাসসুমসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্য এবং যশোরের ৪টি শহীদ পরিবার ও ১৫ জন আহত ব্যক্তি।