জুলাইয়ের নাম ব্যবহার করে অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ চাইলেন নাহিদ ইসলাম

জুলাইয়ের নাম ব্যবহার করে অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ চাইলেন নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, কেউ যদি জুলাই আন্দোলনের নাম বা বৈষম্যবিরোধী ব্যানার ব্যবহার করে অবৈধ কার্যক্রম চালায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাইয়ের নাম নিয়ে কেউ যদি চাঁদাবাজি বা অসাধু কাজ করে, তা মেনে নেওয়া যায় না। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। একইসঙ্গে দলীয় পর্যায়েও আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “চাঁদাবাজি শুধু বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্মে নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভেতরেও এই সমস্যা আছে। এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরো দেশ থেকে নির্মূল করতে হবে—এটাই আমাদের সবার লক্ষ্য।”

‘জুলাই অভ্যুত্থান’ নিয়ে মন্তব্য

‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’-এর এক বছর পূর্তিতে এর সফলতা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম জানান, যেসব প্রত্যাশা নিয়ে আন্দোলন হয়েছিল, তার পুরোপুরি বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। তিনি বলেন, “ইনটারিম সরকারের বেশি দায়িত্ব থাকা উচিত ছিল। তবে আমরা বিশ্বাস করি, জুলাই সনদের মাধ্যমে কিছুটা অর্জন সম্ভব হবে।”

তিনি জানান, ৩ আগস্ট একটি ঐতিহাসিক দিন। এই দিনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একদফা দাবিতে আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। তাই আজ রবিবার (৩ আগস্ট) শহীদ মিনারে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এ কর্মসূচিতে এনসিপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হবে।”

নাহিদ ইসলাম ছাত্রদলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “ছাত্রদল তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি শহীদ মিনার থেকে সরিয়ে শাহবাগে নিয়ে গেছে আমাদের অনুরোধে। এতে জনদুর্ভোগ কিছুটা কম হবে।”

তবে একই দিনে দুইটি বড় সমাবেশ এবং এইচএসসি পরীক্ষা থাকায় যানজটের কারণে মানুষকে কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে বলে তিনি আগেই দুঃখ প্রকাশ করেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে বক্তব্য

নাহিদ ইসলাম জানান, সরকার ৫ আগস্টের মধ্যেই জুলাই সনদের বিষয়টি সমাধান করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তারা। তিনি বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে এনসিপির পক্ষ থেকে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তবে কমিশন কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। আমরা চাই, সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করে এরপর সবাই মিলে স্বাক্ষর করুক।”

তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের পূর্বে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সময় থেকেই এই সনদ কার্যকর করতে হবে। পরবর্তী সংসদ বা গণপরিষদ গঠনও এই সনদের ভিত্তিতে হওয়া উচিত।”

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে নাহিদ ইসলাম জানান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সরকার পক্ষ থেকে খসড়া জমা দেওয়া হয়েছে এবং চূড়ান্ত ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ঘোষণাপত্রে অবশ্যই সাংবিধানিক স্বীকৃতি থাকতে হবে। সংবিধানের প্রস্তাবনা ও তফসিলে জুলাই আন্দোলনের উল্লেখ থাকতে হবে। আমরা আশা করি, সরকার ও সব রাজনৈতিক দল বিষয়টি নিশ্চিত করবে।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ

এদিনের সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারোয়ার, মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ, যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল-আমিন, এস এম সাইফ মোস্তাফিজ ও মো. নিজাম উদ্দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *