জলঢাকায় মাদ্রাসা ছাত্রকে মারধরের অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতির অপ্রীতিকর আচরণে মাহফিল স্থগিত।

মোঃ জামিয়ার রহমান, দেশী বার্তা, জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী।

জলঢাকায় মাদ্রাসা ছাত্রকে মারধরের অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতির অপ্রীতিকর আচরণে মাহফিল স্থগিত।
জলঢাকায় মাদ্রাসা ছাত্রকে মারধরের অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতির অপ্রীতিকর আচরণে মাহফিল স্থগিত।

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার কৈমারী দাখিল মাদ্রাসা মাঠে আগামী ১ নভেম্বর ২০২৫ (শনিবার) বাদ আসর থেকে অনুষ্ঠিতব্য “দ্বিতীয় তাফসীরুল কোরআন মাহফিল” আকস্মিকভাবে স্থগিত হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

মাহফিল সূত্রে জানা যায়, হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রঃ) মহিলা মাদ্রাসা ও জামিয়া আরাবিয়া তা’লীমুস সুন্নাহ মাদ্রাসার উদ্যোগে আয়োজিত এ মাহফিলটি ছিল এলাকাবাসীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল নীলফামারী জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীকের এমপি প্রার্থী আলহাজ্ব সৈয়দ আলী। উদ্বোধক হিসেবে থাকার কথা ছিল সাবেক চেয়ারম্যান ও কৈমারী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ কহিনুরজ্জামান লিটন, এবং সভাপতিত্ব করার কথা ছিল বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব রশিদুল হক-এর।

কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, কৈমারী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম (ভেলশা) মাহফিলের পোস্টারে নিজের নাম না থাকায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে কৈমারী বাজারে পোস্টার লাগাতে আসা দুই মাদ্রাসা শিক্ষার্থী — মোঃ সিফাত (১৪) ও মোঃ আফিজার (১৩)-কে প্রকাশ্যে মারধর ও দুর্ব্যবহার করে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই দুই শিক্ষার্থী।

তবে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি কারও ওপর কোনো প্রভাব খাটাইনি।”

এতে এলাকাবাসী ও মাহফিল আয়োজক কমিটির সদস্যরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, “ধর্মীয় মাহফিলের মতো পবিত্র অনুষ্ঠানে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা টেনে আনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এটি ইসলাম ও ধর্মপ্রিয় মানুষের অনুভূতিতে বড় ধরনের আঘাত।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মাহফিল কমিটির সদস্য জানান, পোস্টারে সভাপতি হিসেবে আলহাজ্ব রশিদুল হকের নাম প্রকাশ করায় স্বেচ্ছাসেবক নেতা তাঁকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে নাম মুছে ফেলার নির্দেশ দেন এবং নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তোলেন।

এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ভয় ও আতঙ্কে মাহফিল আয়োজক কমিটি অনুষ্ঠানটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়।

মাহফিল কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় মাহফিল আয়োজন করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব ও হুমকির কারণে বাধ্য হয়েছি মাহফিলটি স্থগিত করতে।”

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *