
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গত বছরের জুলাই-আগস্টে দেশে ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, মানবতার জন্যও এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। মঙ্গলবার ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে জাতিসংঘ আয়োজিত “জুলাই আন্দোলন ও ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং” বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “গত বছরের জুলাই বিপ্লব ছিল আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম। সাহসী তরুণ-তরুণীরা অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। তাদের সাহস মানবতার পক্ষেই কথা বলেছে।”
অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের হাইকমিশনারের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে জানান, মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আনুমানিক ১৪০০ মানুষ প্রাণ হারায় এবং সহিংসতা ছিল পূর্বপরিকল্পিত, কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত এবং মানবতার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত।
তিনি বলেন, “এই সত্য উদঘাটনে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং রিপোর্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। শুধু এই নিপীড়নের দলিল তৈরিতেই নয়, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধেও তারা সুপারিশ করেছে।”
জাতিসংঘের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ থেকে রোহিঙ্গা সংকট পর্যন্ত জাতিসংঘ বাংলাদেশের পাশে ছিল। জুলাই আন্দোলনের সময়ও তাদের সহযোগিতা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে।”
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সংবিধান ও মানবাধিকার রক্ষায় ব্যাপক সংস্কার শুরু করেছে। জোরপূর্বক গুম রোধে আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুমোদন, ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের সাথে যৌথ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, “ন্যায়বিচার মানে শুধু শাস্তি নয়, এটি নিশ্চিত করে যে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আর কখনো জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে না।”
শেষে তিনি বলেন, “জাতিসংঘের সাথে অংশীদারিত্ব অব্যাহত রেখে আমরা এমন একটি রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি, যেখানে সকল নাগরিক মর্যাদা, স্বাধীনতা ও শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।”