
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দেশের ইসলামিক পণ্ডিত ও আলেমরা উপলব্ধি করছেন যে, এবারের নির্বাচনে ইসলামী শক্তির মধ্যে নির্বাচনী ঐক্য প্রয়োজন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, শিগগিরই ইসলামী দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হবে ইনশাআল্লাহ।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (২৬ ও ২৭ জুন) দুই দিনব্যাপী মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে জামায়াত আয়োজিত উপজেলা/থানা আমীরদের শিক্ষাশিবিরের দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশের ইসলামপন্থীরা বুঝতে পেরেছেন—এই নির্বাচন শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতার নয়, এটি দেশপ্রেম, জাতিসত্তা, ইসলামী মূল্যবোধ এবং শহীদদের স্বপ্ন পূরণের লড়াই। এ লক্ষ্য অর্জনেই আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
পরওয়ার বলেন, জামায়াতের একটি বড় লক্ষ্য হচ্ছে দেশের জনমতকে ইসলামের পক্ষে ফিরিয়ে আনা এবং দেশ পরিচালনার যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করা। তিনি বলেন, “আল্লাহ যদি আমাদেরকে সরকার গঠনের সুযোগ দেন, তাহলে আমাদের প্রস্তুত জনশক্তি রয়েছে। এই সময় আমাদের জনসেবার মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছাতে হবে।”
তিনি বলেন, “নব বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন তৈরি হয়েছে, তা পূরণ করতে হলে ইসলামী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমীরে জামায়াত জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। তাঁর আহ্বানে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর আজ দেশে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বাস্তবতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রয়োজন শুধু রাজনৈতিক সংস্কার এবং দোষীদের বিচার দৃশ্যমান করা।
সাংগঠনিক কাঠামো বিষয়ে পরওয়ার বলেন, “জামায়াতের নিজস্ব কাঠামো এবং কর্মী তৈরির পদ্ধতি অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে নেই। আমরা আমাদের তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে পারলেই জাতীয় নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জন সম্ভব।”
তিনি ইউনিট ভিত্তিক সংগঠনের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “মানবদেহে হৃদপিণ্ড যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি সংগঠনের প্রাণ হচ্ছে ইউনিট। এখান থেকেই কর্মী, রুকন, মিছিল এবং ভোট আসে। একেকটি ইউনিট যদি সঠিকভাবে কাজ করে, তাহলে গোটা সংগঠনের ওপর এর প্রভাব পড়ে।”
পরওয়ার বলেন, “এই নির্বাচন কোনো একক দলের নয়। এটি দেশি-বিদেশি চক্রান্তের বিরুদ্ধে, যারা ইসলামী শক্তিকে নির্মূল করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে একটি ঐতিহাসিক লড়াই।”
শিক্ষাশিবিরে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য আবদুর রব এবং সঞ্চালনা করেন মাওলানা আবদুল হালিম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন এটিএম আজহারুল ইসলাম, সাইফুল আলম খান মিলন, মোবারক হোসাইন, ড. খলিলুর রহমান মাদানী এবং অধ্যাপক আব্দুস সামাদ।