ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে নগর ভবনের সামনে ফের অবস্থান বিএনপির

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে তার সমর্থকেরা আবারও নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকেই বিএনপিপন্থী নেতাকর্মীরা সেখানে জড়ো হন এবং নানা ধরনের স্লোগান দেন।

গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে সকালে সমর্থকদের সংখ্যা কিছুটা কম থাকলেও, সময় বাড়ার সাথে সাথে উপস্থিতি বাড়তে শুরু করে। আন্দোলনরত নেতারা জানিয়েছেন, যতক্ষণ না ইশরাক হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পাচ্ছেন, ততক্ষণ তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

তাদের অভিযোগ, আদালতের রায় স্পষ্টভাবে ইশরাক হোসেনকে বৈধ মেয়র হিসেবে ঘোষণা দিলেও, সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শপথ অনুষ্ঠান আটকে রেখেছে। আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফের ষড়যন্ত্রেই এই বিলম্ব ঘটছে। তারা উপদেষ্টার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, এটি গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস বিজয়ী হন। এরপর নির্বাচনের ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি প্রার্থী ইশরাক হোসেন অনিয়মের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। অবশেষে চলতি বছরের ২৭ মার্চ ঢাকার একটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল তাপসের নির্বাচিত হওয়া বাতিল করে এবং ইশরাককে বৈধ মেয়র হিসেবে ঘোষণা দেয়।

এই রায়ের ভিত্তিতে ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন একটি গেজেট প্রকাশ করে, যেখানে ইশরাককে নতুন মেয়র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তবে, এখনও পর্যন্ত তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।

গত ১৪ মে থেকে এই দাবিতে আন্দোলন শুরু করে বিএনপি। প্রথমে নগর ভবনের সামনে অবস্থান, পরে কাকরাইলে সড়ক অবরোধসহ বিভিন্নভাবে কর্মসূচি চালানো হয়েছে। মাঝখানে ৪৮ ঘণ্টার বিরতির পর বৃহস্পতিবার তারা আবার নগর ভবনের সামনে ফিরে এসেছেন।

অন্যদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, আন্দোলনরত নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী, আদালতের রায় কার্যকর না করায় এটি একটি স্পষ্ট অবমাননার উদাহরণ।

এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় যদি সরকারের হস্তক্ষেপে বাস্তবায়ন না হয়, তবে সেটি দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য একটি উদ্বেগজনক সংকেত।

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। তবে, দীর্ঘদিন দায়িত্বহীন থাকার কারণে নগরবাসীর উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলেও মত দেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *