১৬ বছর আগের দুর্নীতির মামলায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বেকসুর খালাস

১৬ বছর আগের দুর্নীতির মামলায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বেকসুর খালাস

১৬ বছর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় শেষ পর্যন্ত বেকসুর খালাস পেলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আজ রোববার (৫ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মুহাম্মদ কামরুল হাসান খান এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালতের রায়ে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. বোরহান উদ্দিন।

রোববার সকালে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আদালতে উপস্থিত হন এবং তার উপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করা হয়। আদালত তার রায়ে বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়নি, ফলে তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হলো। এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায় ঘোষণার জন্য ৫ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।

মামলাটির সূত্রপাত হয়েছিল ২০০৯ সালের ৫ জানুয়ারি, যখন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক এস. এম. মফিদুল ইসলাম রমনা থানায় এটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের রায়বাজার ও কেরানীগঞ্জে দুটি বাড়িতে অতিরিক্ত নির্মাণ ব্যয় পাওয়া যায়, যার পরিমাণ ছিল ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৫ টাকা। এটি তার গোপন করা ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এছাড়া, তার বাসায় ৫৮ হাজার ৬০০ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী পাওয়া যায়, যা ঘোষিত আয়ের বাইরে।

আরও গুরুতর অভিযোগে বলা হয়, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ২০০৪-২০০৫ সালে ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ার সুবাদে অবৈধভাবে প্রভাব খাটিয়ে মেসার্স আব্দুল মোনেম লিমিটেড ও রেজা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা গ্রহণ করেন, যা তার অবৈধ অর্জন। সব মিলিয়ে, বাড়ি নির্মাণ, ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং অবৈধ অর্থ আদায়ের মাধ্যমে তার মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৮৬ লাখ ৯৫ হাজার ১০৫ টাকা বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল। মামলাটি তদন্ত শেষে একই বছরের ৫ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয় এবং ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া চলাকালে ৪৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৯ জন আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। অবশেষে, এই রায়ের মাধ্যমে সাবেক এই মন্ত্রীর দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার অবসান ঘটল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *