
বাংলাদেশের নদী ও সামুদ্রিক সম্পদ টেকসইভাবে সংরক্ষণের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে বহুমুখী ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সমুদ্র থেকে টেকসই মাছ আহরণ নিশ্চিত করা এবং নদী ভরাট ও দূষণ প্রতিরোধ এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। এ জন্য প্রস্তুত তালিকা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নদী খনন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়া, নদী ও সমুদ্রপথে সৃষ্ট ডুবোচর শনাক্তকরণে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) পটুয়াখালীর মহিপুরে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ‘অবৈধ ট্রলবোটের সরঞ্জামাদি স্বেচ্ছায় অপসারণ ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সুরক্ষা’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুর রউফ এসব তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি জানান, অবৈধ ট্রলার ব্যবহার, ছোট আকারের মাছ ধরা এবং নিষিদ্ধ মৌসুমে মাছ আহরণের বিরুদ্ধে সারা বছর অভিযান পরিচালনা করা হবে। প্রশাসন, কোস্টগার্ড, স্থানীয় সরকার ও মৎস্য অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এ কার্যক্রম চলবে। তার মতে, অবৈধ ট্রলারের কারণে মাছের উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে, যা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি। এসব ট্রলার বন্ধ হলে উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
ড. রউফ আরও বলেন, ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে গভীর সমুদ্র থেকে টুনা মাছ আহরণের জন্য গবেষণা চলছে, যেখানে বেসরকারি খাতকেও যুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের জন্য ভিজিএফ সহায়তা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং ভারতের মাছ ধরার সময়সূচি সমন্বয়ের উদ্যোগও চালু আছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা ভিজিএফ সহায়তা বৃদ্ধি, নদী খনন ত্বরান্বিত করা, ডুবোচর চিহ্নিতকরণ এবং ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়নে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের ওপর গুরুত্ব দেন। জেলে প্রতিনিধি সিদ্দিক মাঝি বৈরী আবহাওয়ায় জেলেদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে আধুনিক নৌযান চালুর দাবি জানান।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্য অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগের পরিচালক মোঃ আলফাজ উদ্দীন শেখ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. মো: আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন ইমাম হাসান আজাদ, পটুয়াখালী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক জুয়েল রানা।
মতবিনিময় সভার আগে মহাপরিচালক ড. রউফের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল মহিপুর মৎস্য আড়ত পরিদর্শন করেন। সভার মাধ্যমে ২৮টি অবৈধ ট্রলবোটের সরঞ্জামাদি স্বেচ্ছায় অপসারণ করা হয়।