গাজার অবরোধ ভাঙতে তিউনিশিয়া থেকে রওনা, ১,৫০০ অধিকারকর্মীর সড়কযাত্রা

গাজার অবরোধ ভাঙতে তিউনিশিয়া থেকে রওনা, ১,৫০০ অধিকারকর্মীর সড়কযাত্রা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দিকেই এগোচ্ছে এক বিশাল অধিকারকর্মী বহর, যারা সড়কপথে তিউনিশিয়া থেকে যাত্রা শুরু করেছে। অবরুদ্ধ গাজাবাসীর কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে এবং ইসরায়েলের অবরোধের প্রতিবাদ জানাতেই তাদের এই প্রচেষ্টা।

‘অবিচলিত’ নামে পরিচিত এই সড়কবহরটি বর্তমানে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে পৌঁছেছে। সেখান থেকে মিসর হয়ে তারা রাফা সীমান্ত দিয়ে গাজা প্রবেশের চেষ্টা করবেন। বহরটিতে রয়েছে ডজনখানেক বাস ও শতাধিক গাড়ি, যেখানে অংশ নিয়েছেন ১,৫০০ জনেরও বেশি অধিকারকর্মী। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

ত্রিপোলিতে পৌঁছানোর পর হাজারো লিবীয় নাগরিক অধিকারকর্মীদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। লিবিয়ার স্থানীয় পুলিশ বহরটিকে নিরাপত্তা দিয়ে সহায়তা করে।

এর আগে, জলপথে গাজা পৌঁছাতে চেষ্টাকারী একাধিক অধিকারকর্মী, যার মধ্যে পরিবেশবাদী গ্রেটা থুনবার্গ-সহ ১২ জন ছিলেন, তাদের বহনকারী জাহাজটিকে আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকেই ছিনতাই করে ইসরায়েলি বাহিনী। যাত্রীদের মধ্যে ৪ জনকে মুক্তি দিলেও বাকিদের এখনো আটকে রাখা হয়েছে।

এই ঘটনার পরপরই তিউনিশিয়া থেকে সড়কপথে নতুন এই উদ্যোগ শুরু হয়।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুধার্ত অঞ্চল। ২০ মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে সেখানে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। অথচ ইসরায়েল এখনো সেখানে পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।

ত্রিপোলিতে সমবেত জনগণের মধ্যে ৪৫ বছর বয়সী স্থপতি আলা আব্দেল রাজ্জাক বলেন, “এই বহর আমাদের মনে আশা ও আনন্দ জাগিয়েছে।” অপর এক লিবীয় নারী সহুর আল-কাতিফ বলেন, “আমার মনে হচ্ছে আমি এখন গাজাতেই আছি।”

এই মানবিক বহরে রয়েছেন আলজেরিয়া, মৌরিতানিয়া, মরক্কো ও লিবিয়ার অধিকারকর্মীরা। তবে লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে, যেখান থেকে মিসরের সীমান্ত, সেই অংশ নিয়ন্ত্রণ করে একটি ভিন্ন সরকার। তারা এখনো বহরটিকে মিসরের দিকে অগ্রসর হওয়ার অনুমতি দেয়নি।

এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বহরটিকে গাজায় ঢুকতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, উল্লেখ করে যে এতে তাদের সেনাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে। তিনি এই বহর থামাতে মিসরকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *