
সব কিছুরই শেষ আছে—এ বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই ইউরোপিয়ান ফুটবলের দীর্ঘ ১৮ বছরের অধ্যায় শেষ করলেন দি মারিয়া। রোজারিওর সেই নিরব, পরিশ্রমী তরুণ যিনি সময়ের সাথে হয়ে উঠেছিলেন কিংবদন্তি, ইউরোপকে জানালেন বিদায়। ক্লাব বিশ্বকাপে বেনফিকার হয়ে শেষ ম্যাচ খেলে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় অধ্যায়ের ইতি টানলেন আর্জেন্টাইন এই উইঙ্গার।

শেষটা হয়েছিল বেদনার, তবে মাথা উঁচু করে। চেলসির বিপক্ষে ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে হারলেও, ম্যাচের যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে বেনফিকাকে সমতায় ফেরান দি মারিয়া। অতিরিক্ত সময়ে ভাগ্য সহায় না হলেও, নিজের দায়িত্বটা যথাযথভাবে পালন করেন তিনি।
এর আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, ক্লাব বিশ্বকাপ শেষে বেনফিকাকে বিদায় জানাবেন এবং ফিরে যাবেন শৈশবের ক্লাব রোসারিও সেন্ট্রালে। আর তাই বেনফিকার ম্যাচগুলোতে ছিল বিশেষ নজর, বিশেষ করে তার ভক্তদের।
ক্লাব বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ চার গোল করে শেষ করেন তিনি, প্রতিটি গোলই পেনাল্টি থেকে। ৩৭ বছর বয়সেও যেভাবে গোল করেছেন, তাতে বোঝা যায় তার প্রতিভা ও মানসিক দৃঢ়তা আজও অটুট।

দি মারিয়ার ইউরোপ যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালে বেনফিকায় যোগ দিয়ে। সেখান থেকে রিয়াল মাদ্রিদ, পরে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি), এক মৌসুম জুভেন্টাস এবং অবশেষে আবার বেনফিকায় ফিরে বৃত্ত সম্পূর্ণ করেন তিনি।
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জিতেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ ও লা লিগা সহ ছয়টি ট্রফি। পিএসজিতে কাটানো সাত বছরে জিতেছেন আরও ১৯টি শিরোপা। দেশের হয়ে গোল করেছেন বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা এবং ফিনালিসিমার ফাইনালে—একজন খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারে যেটা অনেক সময় শুধু স্বপ্নই থেকে যায়।
এতসব অর্জন সত্ত্বেও তিনি ছিলেন একান্ত নিজের মতো। কখনো নিজেকে বড় করে তোলেননি প্রচারমাধ্যমে। নিরবেই কাজ করে গেছেন, গড়েছেন অসাধারণ এক ক্যারিয়ার।
জাতীয় দলকে ইতোমধ্যে বিদায় জানানো দি মারিয়ার সামনে এখন বাকি একটাই পর্ব—রোসারিও সেন্ট্রালের হয়ে নিজের ক্যারিয়ারের শেষ বাঁশি বাজানো। আর সেটা করবেন তিনিই চেনা ঢঙে—নীরব, সাদামাটা, কিন্তু ভেতরে গর্বে ভরা।