
যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত দ্বিদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন টেসলা ও স্পেসএক্সের মালিক ইলন মাস্ক। নিজের মালিকানাধীন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ শনিবার ‘আমেরিকা পার্টি’ নামের নতুন দলের ঘোষণা দেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী এই উদ্যোক্তা।
মাস্ক বলেন, “আমরা একদলীয় ব্যবস্থায় বাস করছি, যেখানে অপচয় আর দুর্নীতির মাধ্যমে দেশকে দেউলিয়া করে তোলা হচ্ছে। আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে আমেরিকা পার্টি গঠন করা হলো।”
পোস্টের সঙ্গে মাস্ক একটি দুই-মাথাওয়ালা সাপের ছবি শেয়ার করেন, যার ক্যাপশনে লেখা ছিল “ইউনিপার্টি শেষ করুন”—যা ইঙ্গিত করে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় দলের একচেটিয়া আধিপত্যের প্রতি। এক দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসে মাস্ক তার অনুসারীদের নিয়ে একটি জরিপ চালান— যেখানে অধিকাংশই নতুন রাজনৈতিক দলের পক্ষে মত দেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে দূরত্ব, নিজস্ব পথে মাস্ক
২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন ও আর্থিক সহায়তা দিলেও পরবর্তীতে ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ নামের একটি ব্যয় পরিকল্পনা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয় মাস্ক ও ট্রাম্পের মধ্যে। মাস্ক বলেন, “এই বিল যুক্তরাষ্ট্রকে দেউলিয়া করে দেবে।” ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত হওয়ার পরই মাস্ক ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।
নতুন দল নিয়ে মাস্কের পরিকল্পনা কী?
এক্সে দেওয়া বার্তায় মাস্ক জানিয়েছেন, তার দলের মূল লক্ষ্য হবে সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের এমন আসনগুলো, যেগুলোতে বড় দুই দলের একচেটিয়া আধিপত্য নেই। তার ভাষায়, “আমরা আইন পাসে ‘decisive votes’ দিতে চাই।” এজন্য সিনেটে ২-৩টি ও প্রতিনিধি পরিষদে ৮-১০টি আসন দখলে নেওয়ার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে আমেরিকা পার্টি।
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি?
মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তৃতীয় কোনো রাজনৈতিক শক্তি কীভাবে ভোটের ফলাফল পাল্টে দিতে পারে, তার অন্যতম উদাহরণ ১৯৯২ সালের নির্বাচন। সেবার ব্যবসায়ী রস পেরটের প্রাপ্ত ভোটই বিল ক্লিনটনের বিজয়ে সহায়ক হয়েছিল। এবার ইলন মাস্কের দলও একই রকম প্রভাব ফেলতে পারে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।