
সৌদি আরব ও পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান একটি আনুষ্ঠানিক পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর মাধ্যমে কয়েক দশক ধরে চলা তাদের নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী হলো। উভয় দেশের নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করাই এই চুক্তির মূল লক্ষ্য।
সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও বাড়বে এবং যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাদের যৌথ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার হবে। চুক্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে এক দেশের বিরুদ্ধে যেকোনো আগ্রাসনকে উভয় দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে গণ্য করা হবে।
রিয়াদে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের কৌশলগত অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় এবং অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়েও মতবিনিময় করেন। বর্তমানে শরীফ সৌদি আরব সফরে রয়েছেন।

রয়টার্স সংবাদ সংস্থাকে একজন জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা বলেন, এই চুক্তি কোনো নির্দিষ্ট দেশ বা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে করা হয়নি, বরং এটি দুই দেশের দীর্ঘস্থায়ী ও গভীর সহযোগিতার একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানান, এটি একটি ব্যাপক প্রতিরক্ষামূলক চুক্তি, যা সামরিক সকল দিককে অন্তর্ভুক্ত করে। তবে, চুক্তিতে প্রয়োজনে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, এই চুক্তিটি এমন এক সময়ে হলো, যখন আরব লীগ এবং ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানাতে কাতারের দোহায় একটি যৌথ জরুরি বৈঠক ডেকেছিল।
ওই সৌদি কর্মকর্তা আরও জোর দিয়ে বলেন, পারমাণবিক শক্তিধর ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক এখনও দৃঢ়। সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তান একটি সংক্ষিপ্ত যুদ্ধে জড়িয়েছিল। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আগের চেয়েও বেশি শক্তিশালী। আমরা এই সম্পর্ককে আরও বাড়িয়ে তুলব এবং যেভাবেই সম্ভব আঞ্চলিক শান্তিতে অবদান রাখার চেষ্টা করব।”
উল্লেখ্য, পাকিস্তান এবং সৌদি আরব কয়েক দশক ধরে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক ও সামরিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। ১৯৬৭ সাল থেকে পাকিস্তান ৮,২০০ জনেরও বেশি সৌদি সামরিক সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং উভয় দেশ বেশ কয়েকটি যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে।