জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, বর্তমান প্রস্তাবিত বাজেট দেশের সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তি বয়ে আনবে না, বরং এতে অভুক্ত ও অর্ধভুক্ত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে।
মঙ্গলবার (৩ জুন ২০২৫) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “এই বাজেট একটি ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। এর মূল কাঠামোতে কোনো মৌলিক পরিবর্তন নেই বরং আগের সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে কিছু কাটছাঁট এবং কিছু বাড়ানো হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয়, রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যও বর্তমান প্রেক্ষাপটে অবাস্তব। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকলে বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া কঠিন হবে, ফলে ঘাটতি পূরণে সরকার সমস্যায় পড়বে।
জিএম কাদের মনে করেন, বাজেটে মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণির মানুষের স্বার্থ রক্ষা হয়নি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকলে মানুষ আরও দরিদ্র হয়ে পড়বে এবং খাদ্য সংকটে পড়বে অনেকেই।
তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধির হার নিম্নমুখী, কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত, অথচ খরচ বাড়ছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ হ্রাস, আয় সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো রূপরেখা নেই, কিন্তু কর আদায়ের উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।
তিনি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকির কথা উল্লেখ করে বলেন, মূল্যস্ফীতি বাড়লে সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়াতে পারে। গ্যাসের ক্ষেত্রেও একই ধরনের শঙ্কা রয়েছে।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে তিনি নীতিবিরোধী এবং দুর্নীতিবাজদের উৎসাহ দেওয়ার পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন। বাজেটে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
জিএম কাদের আরও বলেন, “উদ্যোক্তা তৈরির কথা থাকলেও শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ছাত্রদের লেখাপড়ার পরিবেশ নিশ্চিত না করে তাদের উদ্যোক্তা ও রাজনীতিতে যুক্ত করার চিন্তা ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত হতে পারে।”
তিনি শেষ করে বলেন, “এই বাজেট মূলত আগের ফ্যাসিস্ট সরকারের বাজেটের প্রতিচ্ছবি মাত্র। এতে বৈষম্য হ্রাস, সামাজিক নিরাপত্তা, কিংবা জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণের কোনও কার্যকর দিক নেই।”