
ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে, যেখানে পূর্ব শত্রুতার জেরে টোল আদায়কে কেন্দ্র করে নলছিটির নান্দিকাঠি এলাকায় ইমরান হাওলাদার (৩২)-কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে হত্যাকারীরা। এরপর তার মরদেহ ফেলে দেয় কচুরিপানা ভর্তি একটি ডোবায়। এসময় তার স্ত্রী ফাহিমা বেগম গুরুতর আহত হন।
মামলার বাদী নিহত ইমরানের বাবা আব্দুর রশিদ হাওলাদার দু’জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৮-১০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু বেশিরভাগ অপরাধীর পরিচয় ছিল অজানা।
ঘটনার পর সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকাস্থ সিআইডি সদর দপ্তরের ডিএনএ ল্যাবে পাঠানো হয়। বিশ্লেষণে একটি অজ্ঞাত ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া গেলে এলআইসি (Legal and Intelligence Cell) শাখা সেই ডিএনএ ডাটাবেসের সঙ্গে মিলিয়ে অপরাধীর পরিচয় নিশ্চিত করে।
পরবর্তীতে তথ্য বিশ্লেষণ ও নজরদারির মাধ্যমে সিআইডি নিশ্চিত হয়, সন্দেহভাজন খুনি সেলিম মাদবর @ রফিক (৪৯), পিতা-মৃত আলী মাদবর, মাতা-রিজিয়া বেগম, গ্রামের বাড়ি বরগুনার আমতলী উপজেলার ঘটখালী (চাওড়া)। অভিযান চালিয়ে ২৩ জুন ২০২৫ খ্রিঃ তারিখে তাকে রাজধানীর ডেমরার সারুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তে উঠে এসেছে, সেলিম মাদবরের বিরুদ্ধে এর আগে মুন্সীগঞ্জ ও বাড্ডায় দায়েরকৃত একাধিক ডাকাতি মামলার অভিযোগ রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটও দাখিল করা হয়েছে।
এ মামলায় এজাহারভুক্ত অপর আরেক আসামি আল আমিন হাওলাদার আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ম্যাচিংয়ের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণও পাওয়া গেছে।
সিআইডি জানায়, তাদের এলআইসি ও ক্রাইমসিন ইউনিট যৌথভাবে আধুনিক প্রযুক্তি, বিশ্লেষণী দক্ষতা এবং নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে অপরাধীদের সনাক্ত ও গ্রেফতার করতে বদ্ধপরিকর। এই সাফল্য আবারও প্রমাণ করে, অপরাধ যতই পরিকল্পিত হোক না কেন, আধুনিক ফরেনসিক প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে তা উদঘাটন সম্ভব।