
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: উচ্চ বেতনে চাকরি এবং পরে ব্যবসায়িক অংশীদার করার প্রলোভন দেখিয়ে অবসরপ্রাপ্ত আমলা ও ব্যাংকারদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া একটি প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)। গ্রেপ্তারের সময় প্রতারণার শিকার হতে যাওয়া আরেক ভুক্তভোগীকে নগদ ৭০ লাখ টাকাসহ উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে, চক্রটির কাছ থেকে মাইক্রোবাস ও প্রতারণায় ব্যবহৃত অন্যান্য সরঞ্জামাদিও উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত এই চক্রটি মূলত অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যাংকারদের টার্গেট করত। তারা বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী অফিস স্থাপন করে প্রথমে উচ্চ বেতনে চাকরির লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিত, এরপর যোগাযোগের পর ব্যবসায়িক অংশীদার হওয়ার প্রস্তাব দিত।
ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার মিজানুর রহমানের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তিনি ‘ব্রাদার্স গ্রুপ’ নামক একটি কোম্পানিতে মাসিক ২ লাখ টাকা বেতনের চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কলাবাগানের একটি ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর আসামিরা তাকে ব্যবসায়িক অংশীদার হওয়ার প্রলোভন দেখায়। মিজানুর রহমানের বিশ্বাস অর্জনের জন্য তারা তাঁকে কোরআন শপথ করায় এবং একজন ভারতীয় ক্রেতা সেজে ৩ কোটি টাকার চেক অগ্রিম দেওয়ার নাটক সাজায়।
বিশ্বাস অর্জনের পর চক্রটি মিজানুর রহমানের কাছ থেকে মোট ২২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। টাকা নেওয়ার পরপরই তারা অফিস ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং ফোন করলে ভুক্তভোগীকে হুমকি দেয়। এ ঘটনায় তিনি গত ২৯ জুন পল্লবী থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)-এর তদন্তকারী কর্মকর্তা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ৩০ জুন মোঃ আব্দুল আজিজকে গ্রেপ্তার করেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের মূল হোতাসহ বাকি চার সদস্যকে হাতিরঝিল থানাধীন বিশাল সেন্টার সংলগ্ন আউটার সার্কুলার রোডের তাদের ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের সময়ই আরেক ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা ইলিয়াস খানকে একই কায়দায় প্রতারণার শিকার হওয়ার হাত থেকে নগদ ৭০ লক্ষ টাকাসহ উদ্ধার করা হয়।

পিবিআই জানিয়েছে, ধৃত আসামিদের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া, গত তিন মাসের তদন্তকালীন সময়ে প্রায় ৫০টির অধিক মোবাইল ফোন এবং শতাধিক সীম পরিবর্তনের তথ্যও পাওয়া গেছে। তাদেরকে বিধি মোতাবেক আদালতে সোপর্দ করা হবে।