
চীনের দেওয়া রোবোটিক হাত ও পা জুলাই বিপ্লবে আহতদের জীবনে নতুন আশা জাগিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে অনেকেই হাত-পা হারিয়েছেন বা স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়েছেন। চীনের দেওয়া এই রোবোটিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আহতদের জীবনে স্বাভাবিকতা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তার ভাষায়, “চীন শুধু উন্নয়ন সহযোগী নয়, সংকটের মুহূর্তে বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য ও দীর্ঘস্থায়ী বন্ধু।”
শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর বনানীর হোটেল সারিনায় আয়োজিত ‘নি হাও! চীন-বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা উন্নয়ন প্রদর্শনী-২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বেল্ট অ্যান্ড রোড হেলথকেয়ার সেন্টারের উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে স্বাস্থ্যসেবা খাতে চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতার নানা দিক তুলে ধরা হয়।
নূরজাহান বেগম জানান, চীনের সহায়তায় রংপুর অঞ্চলে ১,০০০ শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। এতে উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জাম, প্রশিক্ষিত ডাক্তার-নার্স ও টেকনিশিয়ানসহ সর্বাধুনিক সেবা থাকবে। একই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে আহতদের পুনর্বাসনের জন্য চীনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, চীনা মেডিকেল ইকুইপমেন্ট কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে উভয় দেশের জন্যই তা লাভজনক হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বিশ্বজুড়ে আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তি ও উচ্চমানের হাসপাতাল পরিচালনায় চীনের সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে তারা একটি টেকসই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চান। তিনি মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় হতাহতদের স্মরণ করে জানান, দুর্ঘটনার পরপরই চীনের চিকিৎসক দল বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল এবং ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া চীনের ১০টিরও বেশি শীর্ষ হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের জন্য অন-সাইট ও অনলাইন পরামর্শ, দ্রুত চিকিৎসা ভিসা প্রসেসিং, অনুবাদক সহায়তা, বিমানবন্দর থেকে পিকআপসহ বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দেয়। দিনব্যাপী এই আয়োজনে স্বাস্থ্য প্রশাসনের প্রতিনিধি, চিকিৎসক, রোগী ও সাধারণ দর্শনার্থীরা অংশ নেন।