ব্রডব্যান্ড গ্রাহকদের জন্য খুশির খবর: ইন্টারনেট সেবায় নতুন ট্যারিফ ঘোষণা করলো সরকার

দেশজুড়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা হলো। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মূল্য কমিয়ে দেশের প্রতিটি নাগরিকের কাছে সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য করতে ‘এক দেশ, এক রেট’ নীতির আওতায় নতুন ট্যারিফ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) বাস্তবায়নে, এই নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ব্রডব্যান্ড সেবা গ্রহণে ব্যয় কমে আসবে ব্যবহারকারীদের জন্য।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৫ এমবিপিএস গতি সম্পন্ন ব্রডব্যান্ড সংযোগ এখন থেকে মাসে মাত্র ৪০০ টাকায় পাওয়া যাবে, যা আগে ছিল ৫০০ টাকা। এছাড়া, ১০ এমবিপিএস সংযোগের মাসিক মূল্য ৮০০ টাকা থেকে কমে ৭০০ টাকা এবং ২০ এমবিপিএস ইন্টারনেটের দাম ১২০০ টাকা থেকে কমিয়ে ১১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও, অন্যান্য প্যাকেজেও ট্যারিফ হ্রাস করা হয়েছে। এই পরিবর্তন দেশের ডিজিটাল রূপান্তরের লক্ষ্যে বড় ধরণের পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে করে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডিজিটাল বিভাজন কমে আসবে এবং প্রান্তিক জনগণও অনলাইন সুবিধার আওতায় আরও সহজে আসতে পারবে।

বিটিআরসি জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য হলো ইন্টারনেট সেবা আরও সাশ্রয়ী এবং গ্রাহকবান্ধব করা। সরকারি ও বেসরকারি আইএসপিগুলোর জন্য একটি যুক্তিসঙ্গত এবং বাস্তবসম্মত ট্যারিফ নির্ধারণ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অনুমোদনে এটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

নতুন ট্যারিফ কার্যকর হবে ১ জুলাই ২০২৫ থেকে

এই নতুন ট্যারিফ ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। প্রয়োজনে বিটিআরসির অনুমোদনের মাধ্যমে ট্যারিফ পুনর্মূল্যায়ন বা সংশোধন করা যেতে পারে।

সেবার মান রক্ষায় নতুন নির্দেশনা

ইন্টারনেট সংযোগ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে এবং গ্রাহক সেবার মান নিশ্চিত করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত নির্ধারণ করা হয়েছে:

  • কোনো গ্রাহকের সংযোগ যদি টানা ৫ দিন বিচ্ছিন্ন থাকে, তবে সে মাসের বিলের ৫০% ছাড় পাবে।
  • ১০ দিন বিচ্ছিন্ন থাকলে ২৫% ছাড় এবং
  • ১৫ দিন পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন থাকলে সম্পূর্ণ মাসের বিল মওকুফ করতে হবে।

এছাড়া, সব আইএসপিকে বিটিআরসি অনুমোদিত ট্যারিফ মেনে চলতে হবে এবং গ্রাহকদের কমপক্ষে ৫ এমবিপিএস গতি দিতে হবে। সংযোগ রেশিও হবে ১:৮, অর্থাৎ আটজন গ্রাহকের জন্য একটি নির্ধারিত ব্যান্ডউইথ নিশ্চিত করতে হবে।

কমিশন অনুমোদিত ট্যারিফ অবশ্যই প্রতিটি আইএসপির নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে এবং কমিশনের অনুমোদন ছাড়া কোনো পরিবর্তন বৈধ হবে না। অনুমোদনবিহীন সেবা চালু রাখলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *