বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন।

বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন।
বজ্রপাতের প্রতিকি ছবি

দেশের পাঁচটি জেলায় বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ে মোট ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুটি উপজেলায় বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন, কিশোরগঞ্জে কলেজ শিক্ষার্থীসহ তিনজন, শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ধান কাটতে গিয়ে একজন কৃষক, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ধান কাটার সময় এক শ্রমিক এবং ময়মনসিংহে কালবৈশাখী ঝড়ে দুইজন নিহত হয়েছেন। রোববার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। বিস্তারিত তথ্য পাঠিয়েছেন আমাদের জেলা প্রতিনিধিরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: জেলার নাসিরনগর ও আখাউড়া উপজেলায় বজ্রপাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেল ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে তিনজন নাসিরনগর ও দুজন আখাউড়ার বাসিন্দা।

স্থানীয় প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অধিকাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাত হলে। এ ঘটনায় নাসিরনগরে হামিদা বেগম (৪০) নামের এক নারী গুরুতর আহত হন। বজ্রাঘাতে তার কণ্ঠনালি ঝলসে যায় এবং বর্তমানে তিনি নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ে দেশের পাঁচ জেলায় ১২ জনের মৃত্যু

রোববার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে দেশের পাঁচটি জেলায় বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন, নিহত হয়েছে গবাদিপশুও।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
নাসিরনগর ও আখাউড়া উপজেলায় বজ্রপাতে পাঁচজন প্রাণ হারান। বিকেল ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে।
নাসিরনগরে নিহতরা হলেন—চাঁনপুর গ্রামের কৃষি শ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক (৩৫), গোকর্ণ গ্রামের শামসুল হুদা (৬৫) এবং কচুয়া গ্রামের শিশু জাকিয়া (৭)।
আহত হন ভলাকুট ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের হামিদা বেগম (৪০)। তার গলা ঝলসে গেছে, তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
আখাউড়ায় বজ্রপাতে নিহত হন রুটি গ্রামের কৃষক সেলিম মিয়া (৬০) এবং বনগজ গ্রামের যুবক জাকির খাঁ (২২)।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং প্রচণ্ড বজ্রপাতেই এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আখাউড়ায় বজ্রাঘাতে দুটি গরুও মারা গেছে।

কিশোরগঞ্জ:
ভৈরব ও কুলিয়ারচর উপজেলায় বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতরা হলেন—ভৈরবের রসুলপুর গ্রামের ফারুক মিয়া (৬০), শ্রীনগর ইউনিয়নের ফয়সাল মিয়া (২৮), এবং কুলিয়ারচরের কলেজ শিক্ষার্থী কবির হোসেন (১৭)।
তারা সবাই খোলা মাঠে ধান কাটার সময় বা কৃষিকাজে নিয়োজিত অবস্থায় বজ্রপাতের শিকার হন।
এছাড়া হোসেনপুর উপজেলার আবু বকর (৬০) বজ্রপাতে আহত হয়ে চিকিৎসা শেষে সুস্থ রয়েছেন।

শেরপুর:
নালিতাবাড়ী উপজেলার আন্ধারুপাড়া গ্রামে বজ্রপাতে মারা যান খবির উদ্দিন (৪৫) নামের এক কৃষিশ্রমিক। আহত হন একই এলাকার শ্রমিক সকুল (২০)।
তারা মাঠে ধান কাটার সময় বজ্রপাতের কবলে পড়েন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
পৌর এলাকার বুলনপুরে বজ্রপাতে নিহত হন আব্দুল কাইয়ুম (৫৫), যিনি ধান কাটার কাজ করছিলেন।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ময়মনসিংহ:
কালবৈশাখী ঝড়ে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নে গাছ উপড়ে পড়ে দুইজনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন—ছনকান্দা গ্রামের মো. সজীব (২৩) এবং চর ঘাগড়া গ্রামের মো. সুরুজ মিয়া (৬০)।
সজীব গরুর খাবারের জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে গাছের নিচে চাপা পড়েন এবং সুরুজ মিয়ার মাথায় গাছের ডাল ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ ঘটনাগুলোকে “হৃদয়বিদারক” বলে মন্তব্য করেছেন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে সহায়তার বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *