বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি কমেছে, অর্থনীতিতে ফিরছে ভারসাম্য

বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি কমেছে, অর্থনীতিতে ফিরছে ভারসাম্য

দেশের বৈদেশিক লেনদেনে চলতি হিসাব ও সামগ্রিক বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ কমে এসেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাস পর্যন্ত ১১ মাসের হিসাব বলছে, দেশের অর্থনীতি কিছুটা ভারসাম্যের দিকে এগোচ্ছে।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত ‘ব্যালান্স অব পেমেন্ট’ হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে— এ সময়ে রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং আমদানি খরচে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে।

বাণিজ্য ঘাটতিতে উন্নতি

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ১১ মাসে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ৪,৮৭০ কোটি ডলারের পণ্য এবং আমদানি করেছে ৬,০২৫ কোটি ডলারের পণ্য। ফলে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১,৯৩৮ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.১৭% কম। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২,০২২ কোটি ডলার।

চলতি হিসাবের ভারসাম্যে স্বস্তি

চলতি হিসাবের ঘাটতি কমে ৪৩ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে, যেখানে গত বছর তা ছিল ৬১১ কোটি ডলার। পাশাপাশি, সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যেও (Overall Balance) ঘাটতি কমে হয়েছে ১১৫ কোটি ডলার, যা গত বছর ছিল ৫৮৮ কোটি ডলার।

রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় উল্লম্ফন

জুলাই-মে সময়ে প্রবাসীরা মোট ২৭.৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮.৭% বেশি। গত অর্থবছরের এই সময়ে রেমিট্যান্স ছিল ২১.৩৭ বিলিয়ন ডলার।

বিনিয়োগ প্রবণতায় উত্থান-পতন

বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (FDI) গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। গেল অর্থবছরে তা ছিল ১৩৫ কোটি ডলার, যা এবার বেড়ে ১৫৮ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। তবে, শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট) এখনো নেতিবাচক ধারায় আছে। এ বছর নিট হিসেবে ১.৩২ কোটি ডলার বিদেশে ফিরে গেছে, যদিও আগের বছর এই ঘাটতি ছিল ৩.০৭ কোটি ডলার।

বিশ্লেষকদের মত

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকারের পরিবর্তনের পর রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বেড়েছে। এছাড়া আমদানি খরচেও স্থিতিশীলতা থাকায় দেশের লেনদেন ভারসাম্যে কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তারা মনে করেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্থিতিশীলতা আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *