নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও পুলিশ সংস্কারে নতুন প্রস্তাব দিল বিএনপি

নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও পুলিশ সংস্কারে নতুন প্রস্তাব দিল বিএনপি

নারী অংশগ্রহণ ও প্রশাসনিক সংস্কারের লক্ষ্যে ঐকমত্য কমিশনের কাছে নতুন কিছু প্রস্তাব পেশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো যেন নারীদের সরাসরি ভোটে অংশগ্রহণে উৎসাহ দেয়, সে লক্ষ্যেই প্রস্তাবনা তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে সংরক্ষিত ৫০টি নারী আসনের পাশাপাশি সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সংবিধান সংশোধন না হওয়ায় আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে কমপক্ষে ১৫টি আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়ার মৌখিক প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এই সংখ্যা আরও বাড়িয়ে ৩০টি আসনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ঐকমত্য কমিশনের ১৯তম দিনের আলোচনায় বিরতির সময় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব তথ্য জানান।

তিনি আরও বলেন, সংরক্ষিত ও সরাসরি মিলিয়ে মোট ৮০টি নারী আসন হলে, রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে। যদি জনমত সহায়ক হয়, ভবিষ্যতের সংসদে সরাসরি নির্বাচনের এই সুযোগ আরও বিস্তৃত হতে পারে।

পুলিশ সংস্কারে ঐকমত্য

পুলিশ প্রশাসনকে আরও জবাবদিহিমূলক ও জনবান্ধব করার লক্ষ্যে একটি ‘পুলিশ সংস্কার কমিশন’ গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমদ। তার মতে, পুলিশের কার্যক্রম যাতে মানুষের সেবামুখী হয় এবং তারা জনগণের বন্ধু হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারে, সেদিকেই গুরুত্ব দিতে হবে।

রাষ্ট্র পরিচালনায় মৌলনীতি নিয়ে বিএনপির অবস্থান

বিএনপি নেতা বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত মৌলনীতি— সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সঙ্গে গণতন্ত্র— এগুলোকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে দলটি। তিনি জানান, পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে যুক্ত হওয়া মহান আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস, গণতন্ত্র এবং জাতীয়তাবাদের মতো মূলনীতির সঙ্গেও বিএনপি একমত।

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদে সীমাবদ্ধতা চান বিএনপি

সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় স্বৈরশাসনের প্রবণতা রোধে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল সর্বোচ্চ ১০ বছর নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে বিএনপি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে ব্যক্তিতান্ত্রিক শাসন বা ফ্যাসিবাদের সুযোগ থাকবে না।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও জানান, নির্বাচন কমিশনের গঠনকে সাংবিধানিক কাঠামোতে আনার দিকেও তারা একমত হয়েছেন। এতে নিরপেক্ষ নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক চর্চা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে বলে দলটির বিশ্বাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *