
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, “আমাদের সংস্কার রোডম্যাপের মূল লক্ষ্য বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা এবং দক্ষ বিচার বিভাগ গড়ে তোলা।”
মঙ্গলবার রাতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) বার্ষিক ‘রুল অব ল’ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিচার বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনটি তিন দিনব্যাপী চলবে এবং শেষ হবে বৃহস্পতিবার।
প্রধান বিচারপতি বলেন, “ইউএনডিপির ২৫তম বার্ষিক আইনের শাসন ও মানবাধিকার সম্মেলনে ভাষণ দিতে পেরে আমি সম্মানিত। বিশ্বব্যাপী আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষার জন্য জাতিসংঘকে আমি ধন্যবাদ জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জাতিসংঘ সনদের মূল কেন্দ্রে রয়েছে। একটি শক্তিশালী এবং স্বাধীন বিচার বিভাগ গড়ে তোলা একটি কঠিন কাজ, তবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জাতিসংঘের সহায়তা কাম্য।”
বাংলাদেশের বিচার বিভাগের বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই মাসে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পূর্ববর্তী সরকারের পতনের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার যাত্রা শুরু করে। এই প্রেক্ষাপটে আমি বিচারপতির দায়িত্ব গ্রহণ করি এবং বিচার বিভাগের সংস্কারের লক্ষ্যে একটি রূপান্তরমূলক এজেন্ডা চালু করি।”
তিনি জানান, “৪২ লাখেরও বেশি মামলার জট, বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের অবিশ্বাস এবং বিচার ব্যবস্থার রাজনৈতিকীকরণের মতো সংকট আমাকে নিরুৎসাহিত করতে পারেনি। বরং জনগণের ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা থেকেই আমি ‘সংস্কার রোডম্যাপ’ ঘোষণা করেছি।”
তিনি বলেন, “বিচার বিভাগকে সংবিধান ও মানবাধিকারের অভিভাবক হিসেবে স্বৈরাচারী কবল থেকে মুক্ত করে একটি স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিকার প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতেই আমাদের এই সংস্কার প্রক্রিয়া।”
প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্যে দেশ-বিদেশের বিচারবিষয়ক মহলে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।