
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চারদিনব্যাপী যে সামরিক উত্তেজনা দেখা গেছে, তা বিগত ৫০ বছরের মধ্যে অন্যতম বড় সংঘর্ষ হিসেবে ধরা হচ্ছে। উভয় দেশই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে পরস্পরের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে, যদিও প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে রয়েছে ভিন্নমত।
নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে—সংঘর্ষটি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত হলেও ধ্বংসযজ্ঞ তুলনামূলকভাবে সীমিত ছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তান উভয়েরই হামলাগুলো নির্ভুল ছিল, তবে বাস্তবিক ক্ষয়ক্ষতি তাদের দাবির তুলনায় অনেক কম।
ভারতের হামলায় পাকিস্তানের কয়েকটি সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষতির প্রমাণ মিলেছে বলে জানা গেছে। করাচির নিকটে অবস্থিত ভোলারি এয়ারবেসে একটি হ্যাঙ্গারে স্পষ্ট ক্ষতির চিহ্ন দেখা যায়। ইসলামাবাদের কাছাকাছি নূর খান বিমানঘাঁটিও লক্ষ্যবস্তু ছিল, যেটি পারমাণবিক অস্ত্র নিরাপত্তা ইউনিটের নিকটে অবস্থিত। ভারতের হামলার পরপরই রাহিম ইয়ার খান বিমানঘাঁটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান।
পাকিস্তানের সারগোধা বিমানঘাঁটিতেও ভারতীয় হামলায় রানওয়ের একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে ভারত জানায়। অন্যদিকে, পাকিস্তান দাবি করেছে যে, তারা ভারতের অন্তত ২০টির বেশি সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে। তবে উপগ্রহ চিত্রে এর তেমন প্রমাণ মেলেনি।
পাকিস্তান উদমপুর বিমানঘাঁটি ধ্বংসের দাবি করলেও, স্যাটেলাইট ছবিতে বড় ধরনের কোনো ক্ষতির চিহ্ন দেখা যায়নি। ভারত একজন সেনার মৃত্যুর কথা স্বীকার করলেও, পুরো ভিত্তিকে ধ্বংসের প্রমাণ নেই।
এই সংঘর্ষে ভারত পাঁচজন ও পাকিস্তান ১১ জন সেনার মৃত্যুর কথা জানিয়েছে। ভারতের মূল ক্ষতি হয়েছে বিমান হারানোর ক্ষেত্রে, তবে সরকারিভাবে সংখ্যা প্রকাশ হয়নি। পাকিস্তান বলছে, তারা ভারতের ৫টি বিমান ভূপাতিত করেছে, যদিও নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে—সংখ্যা দুটি হতে পারে।
এই সংঘর্ষে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং নির্ভুল হামলার প্রবণতা দেখা গেলেও, উভয় পক্ষের পক্ষপাতদুষ্ট বিবৃতি বাস্তব চিত্রের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে না।