
ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় সাধু বেশের বৃদ্ধ হালিম উদ্দিন আকন্দকে জোরপূর্বক চুল, দাড়ি ও মাথার জটা কেটে দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এই ঘটনার শিকার বৃদ্ধের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে।
তারাকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের বাসিন্দা ৭০ বছর বয়সী হালিম উদ্দিন (এলাকায় হালিম ফকির নামে পরিচিত) ঘটনাটির বর্ণনা দিয়ে বলেন, “আমার তো শক্তি কোলাই না। ৮-১০ জনে ধইরাললে কী করণ। আমারে ফালায়া দিয়া হুতাইয়া চুল কাটছে। হেইবালা (তখন) আমি বেহুঁশ হয়ে গেছিলাম।” তিনি জানান, ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং ঘরবন্দী আছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা নিশ্চিত করেছেন যে, হালিম উদ্দিন উন্মাদ বা মানসিক বিকারগ্রস্ত নন। তিনি আগে পেশায় কৃষক ছিলেন, বর্তমানে ফকিরি হালে আছেন। দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে তাঁর মাথায় জটা ছিল। তিনি হজরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহ পরাণ (রহ.)-এর ভক্ত। গত কোরবানির ঈদের কয়েকদিন আগে কাশিগঞ্জ বাজারে হঠাৎ একদল লোক এসে জোরপূর্বক তাঁর মাথার জটা, দাড়ি ও চুল কেটে গোসল করিয়ে নতুন কাপড় পরিয়ে চলে যায়।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ময়মনসিংহ বাউল সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম হালিম উদ্দিনকে দেখতে যান। তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “হালিম ভাই তরিকায়ে নক্সাবন্দিয়া ধারার অনুরক্ত… সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাই।”
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ টিপু সুলতান জানান, যারা এই কাজ করেছে, স্থানীয় কেউ তাদের চিনতে পারেনি। তিনি বলেন, বৃদ্ধ বা তাঁর পরিবার কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে চাইলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাকির হোসাইন জানিয়েছেন, তিনি ওসিকে বিষয়টি খোঁজ নিতে বলেছেন এবং ঘটনাটি প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।